১৫ আগস্ট যা হারিয়েছি আজও তা ফিরে পাইনি

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

পনেরো আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা, যা ভুলতে পারলেই ভালো হতো। এই দিন আমার জীবনের ওপর দিয়ে এক বিরাট প্রলয় ঘটে যায়। জীবনের সব চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনা পাল্টে দেয়। শুধু আমার নয়, আমার মতো লাখো যুবকের।
বাকশালের জেলা গভর্নরদের ঢাকায় প্রশিক্ষণ চলছে। শিগগিরই তারা ফিরে আসবেন। ফিরে এলে আমরা যারা পার্টির সার্বক্ষণিক কর্মী; ব্যস্ত হয়ে পড়ব। সিলেটের জিন্দাবাজার আওয়ামী লীগ অফিসকে অস্থায়ী বাকশাল অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে তখন। বিকেলে অফিসভর্তি নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইসমত আহমদ চৌধুরী বললেন, গভর্নররা ফিরে এলে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ব। কারও ব্যক্তিগত প্রয়োজন থাকলে তার আগেই সেরে ফেলতে হবে।
আমি ছিলাম জেলা ন্যাপের সার্বক্ষণিক কর্মী। বাকশালের অফিস সহকারী হিসেবে আমাকে আগেই ঠিক করা হয়েছে। আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু দিলীপ লাহিড়ী সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জ কলেজের অধ্যাপক। ২৫ মার্চের পর সবার মতো সেও চলে যায় ভারতে। আসামের করিমগঞ্জ বদরপুর কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়। একপর্যায়ে সেখান থেকে চলে যায় মেঘালয়ের শিলং সেন্ট এডমন্ডস কলেজে। মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে তার বিয়ে হয় শিলংয়েই। আমি তখন ডাউকিতে। সিলেট তামাবিল বর্ডার শিলংয়ের কাছেই। কিন্তু যুদ্ধকালীন ব্যস্ততার কারণে বিয়েতে যেতে পারিনি। যুদ্ধের সময় ডাউকি ও শিলংয়ে অনেকের সহযোগিতা পেয়েছি। দেশে আসার পর একবার বেড়াতে যাব—সে আর হয়ে ওঠেনি। যুদ্ধের পর দেশ গঠনের কাজে আরও ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই ভাবলাম এই সুযোগে একবার ঘুরে এলে মন্দ হয় না।
কিন্তু যেতে গেলে প্রথমত বেশ টাকার দরকার, তারপর মেঘালয় তখন ভারতের ‘রেস্ট্রিকটেড’ এলাকা। ভিসা পাওয়া খুব কঠিন। তারপর সময়ও লাগে অনেক। সিদ্ধান্ত নিলাম ভিসার ব্যবস্থা করতে পারলে মেঘালয়ে বেড়িয়ে আসব। সন্ধ্যার পর বাসায় এসে ঢাকায় পীর সাহেবকে (শ্রদ্ধেয় পীর হবিবুর রহমান) ফোন করলাম। আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। বিষয়টি খুলে বলতেই বললেন, ‘পাসপোর্ট নিয়ে চলে আস।’ রাতেই ফোন করলাম ইসমত ভাইকে। বললেন, ‘আমি তিন শ টাকা দেব।’ পরদিন চলে গেলাম ঢাকায়। ভারতীয় হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার জনৈক ভট্টাচার্যের পিতৃভূমি ছিল সিলেটের জলালপুর; পীর সাহেবের এলাকা। পীর সাহেবকে খুব মান্য করেন। টেলিফোন করে তিনি আমাকে পাঠিয়ে দিলেন ওই ব্যক্তির কাছে। আধ ঘণ্টার মধ্যে ভিসা নিয়ে চলে এলাম। ভীষণ খুশি, রাতে ফিরে যাব সিলেট। সুরঞ্জিতদা (সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত) তখন ঢাকার হাতিরপুলে থাকেন। ভারতীয় দূতাবাস থেকে ফেরার পথে গেলাম তাঁর বাসায়। শিলং বেড়াতে যাব শুনে দু শ টাকা হাতে তুলে দিলেন। পীর সাহেবের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাতের ট্রেনে চলে এলাম সিলেট।
পরদিন ১৪ আগস্ট সকালে শিলংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেব। সমস্যা দেখা দিল, আমার এলাকার এক গরিব মেধাবী ছাত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন ডাক্তারি পড়তে যাবে, তা নিয়ে। ১৪ আগস্ট সন্ধ্যায় তাঁর ফ্লাইট। আমার অনুরোধে পীর সাহেব মহিউদ্দিন সাহেবকে (আফ্রো-এশিয়া সংহতি পরিষদের সভাপতি) বলে আফ্রো-এশীয় সংহতি পরিষদের মাধ্যমে বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কখনো তিনি ঢাকায় যাননি। আমারই নিয়ে যাওয়ার কথা। মহাসংকটে পড়লাম। অবশেষে এক সহকর্মীকে দিয়ে ১৩ আগস্ট রাতে তাঁকে সোভিয়েতের উদ্দেশ্যে ঢাকায় পাঠিয়ে দিলাম। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কিছুক্ষণ আগে তাঁর ফ্লাইট হয়।
পরদিন সকাল ১০টার বাসে রওনা দিলাম শিলংয়ের উদ্দেশ্যে। সন্ধ্যায় শিলং পৌঁছে চলে গেলাম বন্ধু দিলীপের বাসায়। বাসায় পৌঁছে জানতে পারলাম দিলীপ আজ সকালে বড়দার অসুখের খবর পেয়ে সিলেট হবিগঞ্জের চণ্ডীছড়া চা-বাগানে চলে গেছে। বলে গেছে, সে না ফেরা পর্যন্ত আমি যেন বাংলাদেশে না ফিরি। ঘরে তার নতুন বউ; এই প্রথম দেখলাম। এক শ্যালিকাকে সঙ্গী হিসেবে বাসায় রেখে গেছে। বউয়ের সঙ্গে দেখা না হলেও দিলীপের কাছ থেকে আমার সম্পর্কে আগে থেকেই জেনে আছে সব। শিলংয়ে বেশ ঠান্ডা, তাই গরম পানি দিয়ে স্নান করে নিলাম। খাবার টেবিলে বসে খেতে খেতে বন্ধুর বউ ও শ্যালিকার সঙ্গে গল্প। দিলীপ ও তাঁর বউ দুজনই একই কলেজের বাংলার অধ্যাপক। পরে দুজনই বাংলায় ডক্টরেট করেছে। রাত প্রায় ১২টায় সবাই বিদায় নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
পরিশ্রান্ত। তার ওপর শীতের দেশ। রাতে ভালো ঘুম হলো। সকাল ৮টায় ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে চা-নাশতা করতে রান্নাঘরে উনুনের কাছে বেতের মোড়া নিয়ে বসি। বাংলাদেশের খবর শুনতে রেডিওটা আনতে দিলীপের শ্যালিকাকে বললাম। রেডিওতে মাত্র বাংলাদেশ চ্যানেল ধরেছি, তখনই বঙ্গবন্ধু হত্যার খবর প্রচারিত হচ্ছে। ক্ষমতা গ্রহণ করেছে খন্দকার মোশতাক। যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত হলো। বাকশাল গঠনের পর থেকে আমরা যে আশঙ্কা করছিলাম, তাই ঘটল। খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় আসা মানে স্বাধীনতার পক্ষের কেউ আর হয়তো জীবিত নেই। কোথায় যাব, কী করব বুদ্ধি পরামর্শেরও কেউ নেই। যুদ্ধের সময় পীর সাহেব শিলং থাকতেন। ডাউকি থেকে শিলং এলে বিভিন্ন প্রয়োজনে পীর সাহেবের সঙ্গে কংগ্রেস অফিস, সিপিআই অফিস ও পত্রিকা অফিসে অনেক গিয়েছি। অনেকের সঙ্গে পরিচয়ও হয়েছে। পার্টি অফিসগুলো এত সকালে খুলবে না ভেবে চলে গেলাম পত্রিকা অফিসে। সেখানে দেখা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার দুর্গাদাস ভট্টাচার্য, ললিত লাহিড়ী ও মিশ্রবাবুর সঙ্গে। ললিতবাবু সিপিআইয়ের সাংবাদিক এবং মিশ্রবাবু সোভিয়েত ইউনিয়নে ইন্ডিয়ান বই অনুবাদের কাজ করতেন। এখন শিলং সিপিআইয়ের সঙ্গে কাজ করেন।
দুর্গাদাসবাবু জানালেন, কিছুক্ষণ আগে কলকাতা থেকে জেনেছেন ন্যাপের পীর হবিব, মতিয়া চৌধুরী, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ অনেককেই পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এসবই অসমর্থিত খবর। মিশ্রবাবু বললেন, ‘ঘাবড়িও না বিশ্বাস, ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে আমাদের মাথাটি আপাতত রক্ষা করেছেন। সেই ঘটনাটি এখানে না ঘটে আপনাদের ঘাড়ে পড়েছে।’ ঘণ্টাখানেক বসে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত, অসমর্থিত খবর শুনে মানসিকভাবে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। চলে এলাম বাসায়। বিদায় নিয়ে রওনা দিলাম ডাউকি তথা তামাবিল সীমান্তে। যুদ্ধের সময় সেখানে ছিলাম। অনেকেই পরিচিত। তামাবিল সীমান্তে কাস্টমস ইন্সপেক্টর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হবিবুর রহমান সাহেবের ভাগ্নিজামাই। শিলং যাওয়ার পথে কথা হয়েছে। ভাবলাম ডাউকি থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানার চেষ্টা করব।
ডাউকিতে গিয়ে উঠলাম দিলীপ ভট্টাচার্যের বাসায়। দিলীপ ভট্টাচার্য ডাউকি-শিলং বাস ম্যানেজার। যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুটিদের ক্যাম্পে নিয়ে যেতে বাস দিয়ে অনেক সাহায্য করেছেন। ছোট ভাই নিখিল ভট্টাচার্য সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্সের ইন্সপেক্টর। মুক্তিযুদ্ধের পর ডাউকিতে পোস্টিং নিয়ে এসেছেন। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমাকে পেয়ে ভীষণ খুশি। বললেন, ‘এই মাত্র সেন্ট্রাল থেকে খবর এসেছে, বাংলাদেশ থেকে কেউ, বিশেষত রাজনৈতিক কোনো ব্যক্তিত্ব পালিয়ে এলে, তাকে আশ্রয় দিতে এবং প্রয়োজনে কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে।
মাইল খানেক দূর তামাবিল চেকপোস্ট। বাংলাদেশ কাস্টমসে যোগাযোগ করতে তাঁকে নিয়ে চলে গেলাম সীমান্তে। পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ চেকপোস্ট। বাংলাদেশ চেকপোস্টে বিডিআর জোয়ানরা পাহারা দিচ্ছে। কোনোভাবে একজন চৌকিদারকে পাঠানো হলো কাস্টমস ইন্সপেক্টরের কাছে। জানালেন, তাঁর মামার নিশ্চিত খবর এখনো পাননি। তবে ঢালাওভাবে কোনো হত্যাকাণ্ড হয়নি—এ কথা নিশ্চিত করলেন। পুরো নিশ্চিত হতে আরও কয়েক দিন ডাউকিতে থাকার উপদেশ দিলেন।
রাতেই নিখিল বাবুর কাছে দিল্লি থেকে ফোন আসে, বাংলাদেশ থেকে কোনো লোক, বিশেষত বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ পালিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে খবর দিতে। এভাবে এক রাত কেটে গেল। পর দিন ফোন এল, সীমান্তে আর্মি মার্চ করতে পারে। আরেকটি রাত কেটে গেল। পর দিন সকালে ফোন এল, না আর্মি মার্চ করবে না। কারণ ঢাকা থেকে কোনো নির্দেশ বা সহযোগিতার বার্তা পাওয়া যায়নি। সীমান্তে গিয়ে সিলেটের কোনো খবর পেলাম না। অনেক ভেবে বিকেলের বাসে আবার শিলং ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেখান থেকে পর দিন করিমগঞ্জ গিয়ে জকিগঞ্জ হয়ে দেশে ঢোকার চেষ্টা করব। করিমগঞ্জ গিয়ে সেখানকার সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্সের ইন্সপেক্টর জনৈক অহমিয়াবাবুর বাসায় থাকার ব্যবস্থা ফোনে করে দিলেন। ফোনে আমার সঙ্গেও কথা বলিয়ে দিলেন। করিমগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে তিনি আমাকে নিয়ে যাবেন।
বিকেলের বাসে আবার শিলংয়ে বন্ধুর বাসায় চলে গেলাম। বন্ধুর স্ত্রী কোনো অবস্থায় করিমগঞ্জ যেতে দিতে রাজি নন। এদিকে দিলীপও আটকা পড়েছে বাংলাদেশে গিয়ে। তাই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন। আমাকে চলে যেতে ভীষণ বাধা দিচ্ছেন। কিন্তু দেশে পার্টির সহকর্মী ও নেতাদের কথা ভেবে বন্ধুর বউয়ের অনুরোধ রক্ষা করতে পারিনি। অনুরোধ অগ্রাহ্য করেই পরদিন সকালে করিমগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সন্ধ্যার আগেই করিমগঞ্জ গিয়ে পৌঁছেছি। যথারীতি অহমিয়াবাবুও উপস্থিত। ইন্টেলিজেন্সের লোক তাই আমাকে শনাক্ত করতে একটুও বেগ পেতে হয়নি। রিকশা করে চলে গেলাম তাঁর বাসায়।
বাসায় চা খেতে খেতে ঢাকার প্রকৃত অবস্থা জানালেন। বললেন, বঙ্গবন্ধু পরিবার, শেখ মণি ও সেরনিয়াবাতের পরিবার ছাড়া আর কোনো বড় হত্যাকাণ্ড হয়নি। অবস্থা মোটামুটি স্বাভাবিক, আপনি দেশে চলে যেতে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। বললেন, ‘সিলেটে একজন লোক পাঠিয়েছি, আগামীকাল ফিরবে। এই সময়টুকু অর্থাৎ আগামীকাল পর্যন্ত আমার এখানে অতিথি হিসেবে থাকেন। আরও নিশ্চিত হয়ে আপনি যেতে পারবেন।’ রাতে যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশের অনেক অজানা খবর ও তথ্য তাঁর কাছ থেকে শুনলাম। বিশেষ করে জাসদের কর্মকাণ্ড, তাদের আস্তানা, কারা মূল মূল নেতা, কোথায় অস্ত্রের মজুত ইত্যাদি। রাজনগরের আহাদ চৌধুরী সিলেটে জাসদের মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন বলে জানালেন। এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ভদ্রলোকের সংসার। দেড় দিনে পরম আত্মীয়তার মতো সম্পর্ক হয়ে গেছে। এমন না হলে ইন্টেলিজেন্সের কাজ কী করা যায়?
রাতেই প্রেরিত লোক সিলেট থেকে ফিরে আসেন। আমার চলে যেতে কোনো অসুবিধা হবে না। পরদিন সকালে করিমগঞ্জে কাস্টমসের কাজ শেষ করে নৌকায় উঠিয়ে দিলেন। বিদায় নিয়ে অপর পারে বাংলাদেশের কাস্টমস জকিগঞ্জের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমালাম। নদী পার হয়ে নির্বিঘ্নে কাস্টমস সেরে এগারোটার বাসে সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হই। বিকেল তিনটায় বাসায় পৌঁছে যাই।
শহরে সবকিছুই স্বাভাবিক। তবে সর্বত্র একটি গুমোট ভাব। মানুষের মনে যেন এক গভীর দুঃখ ও বেদনার ছাপ। কেউ কিছু প্রাণ খুলে বলতে পারছে না। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু মানুষ মেনে নিতে না পারলেও কিছু করতে পারছে না। ১৪ আগস্ট যা রেখে গিয়েছিলাম সবই ভেস্তে গেছে; সব পরিকল্পনাও। শহীদের স্বপ্ন, স্বাধীনতার স্বপ্ন, দেশ গঠনের স্বপ্ন—সবই বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে উধাও হয়ে গেছে। যেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নয়, পুরো বাংলাদেশটাকেই হত্যা করা হয়েছে। দেশটা যে উল্টো পথে অর্থাৎ স্বাধীনতাপূর্ব পাকিস্তানি ভাবধারায় চলতে শুরু করেছে, তা সহজেই বোঝা গেল। সেই যে সব হারালাম, আজও ফিরে পেলাম না। দেশের উন্নতি হয়েছে অস্বীকার করার নয়; কিন্তু দেশটা কি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আছে?