ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করল আমিরাত-বাহরাইন

চুক্তি স্বাক্ষরের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (বাঁয়ে), বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ আল জায়ানির (ডান থেকে দ্বিতীয়) ও আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান (ডানে)। সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র ১৫ সেপ্টেম্বর
ছবি: এএফপি

ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে আরব দেশ বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউসে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির স্বাক্ষরের বিষয়ে আগেই ঘোষণা দিয়েছিল এই তিন দেশ।

এদিকে এই চুক্তির প্রতিবাদে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা থেকে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের প্রাক্কালে এই রকেট হামলা চালানো হয়। তবে এতে কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পৃথকভাবে আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ আল জায়ানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও এই তিন নেতা মিলে এক যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন।

ইসরায়েলের সঙ্গে এই আরব দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে মূল ভূমিকা পালন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। একে ইসরায়েলের সফলতা হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ।

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নয়—এমন নীতিতেই দীর্ঘদিন চলছিল আরব দেশগুলো। কিন্তু সেই নীতি থেকে অনেকটা হঠাৎ করেই সরে এসেছে আমিরাত ও বাহরাইন।

আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, প্রথম উপসাগরীয় আরব দেশ হিসেবে আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেয় গত মাসে। সেই পথে হেঁটেছে আরেক উপসাগরীয় দেশ বাহরাইনও।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার তিন বছর পর ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশশাসিত ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্ম হয়। পশ্চিমা বিশ্বের বানানো এই রাষ্ট্রকে কখনো মেনে নেয়নি আরবরা। ১৯৫৬, ১৯৬৭ ও সবশেষ ১৯৭৩ সালে আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ হয় ইসরায়েলের। প্রতিবারই আরবরা পরাজিত হয়। এরপর থেকেই ইহুদিদের কাছে জমি হারাতে বসে ফিলিস্তিনিরা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দুটি রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে সংঘাত মেটানোর চেষ্টা করলেও তা এখনো সফলতার মুখ দেখেনি।

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় আরব দেশগুলো প্রধান তিনটি শর্ত দিয়েছিল। সেগুলো হলো, যুদ্ধের সময় আরব দেশগুলোর দখল করা জমি ছেড়ে দেওয়া, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ও স্বীকৃতি এবং ফিলিস্তিনের দখল করা জমি হস্তান্তর। সেই শর্তের কোনোটা পূরণ না হওয়ার পরও আরব দেশগুলো ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলছে। এখন পর্যন্ত আমিরাত ও বাহরাইন ছাড়া আরও দুই আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি হয়েছে। ১৯৭৯ সালে মিসরের সঙ্গে এবং ১৯৯৪ সালে জর্ডানের সঙ্গে চুক্তি করে দেশটি।