বৈরুতে যে আশা জেগেছিল

বিধ্বস্ত ভবনের প্রায় ৯৫ শতাংশ ধ্বংসস্তূপ অপসারণ করে সেখানে জীবিত কাউকে পাওয়া যায়নি
ছবি: রয়টার্স

কুকুর সংকেত দিয়েছিল ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে আছে একজন। পরীক্ষা করে যন্ত্রও আভাস দেয়, একজনের হৃদ্‌যন্ত্রের ধুকপুকানি পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সকলই গরল ভেল। জীবিত একজনকে খুঁজে পাওয়ার আশা শেষে মিলিয়ে গেল হতাশায়।

অনুসন্ধান চালিয়ে লেবাননের বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় জমে থাকা ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত কাউকে পাওয়া যায়নি। আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত কেউ আছে বলে আশা জেগেছিল। কিন্তু উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে প্রাণের কোনো অস্তিত্ব পাননি।

চিলির একটি উদ্ধারকারী দল গত বুধবার রাতে এলাকাটির কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন তাদের সঙ্গে থাকা বিশেষ প্রশিক্ষিত কুকুর ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত মানুষ থাকতে পারে বলে সংকেত দেয়। পরদিন বৃহস্পতিবারও একই সংকেত দেয় কুকুর।

বৃহস্পতিবার বিশেষায়িত সেন্সর মেশিন ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষের সম্ভাব্য হৃৎস্পন্দন শনাক্ত করে। মানুষের হৃৎস্পন্দন শনাক্তের পর সেখানে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়।

গতকাল শনিবার নাগাদ বিধ্বস্ত ভবনের প্রায় ৯৫ শতাংশ ধ্বংসস্তূপ অপসারণ করেন উদ্ধারকর্মীরা। এ অবস্থায় সেখানে জীবিত কাউকে পাওয়া যায়নি।

ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে চিলির উদ্ধারকারী দলের সদস্যসহ প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন।

ভয়াবহ বিস্ফোরণের এক মাসের মাথায় ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবিত কেউ উদ্ধার হতে পারেন—এই ভেবে ঘটনাস্থলে মানুষের ভিড় জমে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবাইকে হতাশ হতে হয়।

উদ্ধারকাজে যুক্ত চিলির দলটি জানায়, ধ্বংসস্তূপ যতটা সরানো হয়েছে, সেখানে জীবিত কাউকে পাওয়া যায়নি। ভবনের ভেতরে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের নিশ্বাস হয়তো শনাক্ত হয়েছিল।

গত ৪ আগস্ট বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। বৈরুত বন্দরের গুদামে ফেলে রাখা ২ হাজার ৭৫০ টন নাইট্রেট অ্যামোনিয়ামের কারণে এই বিস্ফোরণ হয়।

বিস্ফোরণে প্রায় ২০০ মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন হাজারো মানুষ।

ভয়াবহ বিস্ফোরণের এক মাস পর বৈরুত বন্দরের প্রবেশমুখের কাছে পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।