Thank you for trying Sticky AMP!!

আ.লীগ প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ তাঁর স্ত্রী

নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে নির্বাচনে বিজয়ী ছলিমউদ্দিন তাঁর কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করতে গতকাল বদলগাছীতে আসেন। এ জন্য দলের কর্মী-সমর্থকেরা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তুহিন কান্তির বাসার সামনে জড়ো হন প্রথম আলো

একতরফা নির্বাচন সত্ত্বেও নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকরাম হোসেন চৌধুরী জিততে পারেননি। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিমউদ্দিন তরফদার বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকরাম হোসেন চৌধুরী কেন হারলেন তা নিয়ে গতকাল সোমবার নির্বাচনী এলাকার সর্বত্রই আলোচনা চলেছে। দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা জানান, আকরাম হোসেন চৌধুরীর পরাজয়ের নেপথ্যে তাঁর স্ত্রী মাহফুজা আকরাম চৌধুরী ওরফে মায়ার হাত রয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে মানবাধিকার কর্মী আকরাম হোসেন চৌধুরী এ আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর তিনি দুটি উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে দলের তরুণদের মূল্যায়ন করেন। এ কারণে দলের প্রবীণ নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ সাংসদের ওপর নাখোশ ছিলেন।
এ ছাড়া সাংসদের স্ত্রী মাহফুজা আকরাম চৌধুরী নির্বাচনী এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জনবল নিয়োগ, টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময় খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির যাবতীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। সাংসদ নিজেও তাঁর স্ত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে যেতেন না। এ কারণে মাহফুজা আকরাম চৌধুরী এলাকায় ‘ছায়া এমপি’ হিসেবেও পরিচিতি পান। একই সঙ্গে নেতা-কর্মীদের কাছে ‘বিন্দুমাসি’ (ভারতীয় নাটকের খলচরিত্র) হিসেবে খ্যাতি পান। সাংসদের স্ত্রীর এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জবাব দিতে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
বদলগাছী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুহিন কান্তি চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আয়েন উদ্দিন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিমউদ্দিন তরফদারের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন।
গতকাল সোমবার তুহিন কান্তি চৌধুরীর বাসভবনে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে ছলিমউদ্দিন তরফদারের কয়েক শ কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হয়েছেন। এই আসনের নবনির্বাচিত সাংসদ ছলিমউদ্দিন তরফদার তাঁর কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে ওই বাসায় আসেন। এ সময় তুহিন কান্তি চৌধুরী বলেন, আকরাম হোসেন চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রীর গত পাঁচ বছরের কর্মকাণ্ডের জবাব ভোটাররা ব্যালটে দিয়েছেন। সাংসদ নিজেই দলের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছেন।
মিঠাপুর এলাকার যুবলীগ কর্মী শিপন বলেন, ‘বিন্দুমাসির বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জবাব দিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছি। গত পাঁচ বছরে সাংসদের স্ত্রী এলাকার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় নিয়োগ-বাণিজ্য এবং টিআর-কাবিখা প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ করেছেন।’
এসব ব্যাপারে কথা বলতে আকরাম চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। সাংসদের সমর্থক বদলগাছী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাফর মো. শফি মাহমুদ বলেন, সাংসদের স্ত্রীর কারণেই দলের অনেক নেতা-কর্মী সাংসদের ওপর নাখোশ ছিলেন। এসব কারণেই হয়তো তাঁর পরাজয় ঘটেছে।