Thank you for trying Sticky AMP!!

অগ্নিদগ্ধ লিজার জন্য উপহার নিয়ে হাজির এসপি আবিদা

লিজার মা–বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয় ঈদ উপহারসামগ্রী। ছবি: প্রথম আলো

অগ্নিদগ্ধ শিশু লিজা আখতারের (৬) জন্য নিজে ঈদের উপহার নিয়ে হাজির হলেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা।আজ শনিবার বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে লিজার বাড়িতে যান আবিদা।

ঈদ উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল লিজার জন্য একসেট সুতি কাপড়ের জামা ও প্যান্ট, দুটি দেশি মুরগি, পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি পোলাওয়ের চাল, দুই প্যাকেট সেমাই, দুই কেজি চিনি, আধা কেজি গুঁড়া দুধ, এক কেজি লবণ, এক লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি আলু, এক কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি পেঁয়াজ, দুই হালি লেবু, এক কেজি আপেল, এক কেজি মাল্টা ও কলা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম, মোগলহাট ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

গত ১ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঘরে অসাবধানতাবশত কুপি উল্টে পড়ে লিজার পরনের জামাকাপড়ে আগুন ধরে যায়। এতে তার শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যায়। টাকাপয়সার অভাবে চার দিন গ্রাম্য কবিরাজি চিকিৎসা দেওয়া হয় শিশুটিকে। এ অবস্থায় ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাস দেখে লিজার চিকিৎসাসহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর ও দায়িত্ব নেন আবিদা সুলতানা। তাঁর সরাসরি সহায়তায় পুলিশের অ্যাম্বুলেন্স করে লিজাকে ৪ এপ্রিল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে ছিল লিজার মা সামিরন নেছা আর বাবা সিদ্দিক আলী।
লিজার বাবা ভাজা বাদাম ফেরি করে বিক্রি করে।

পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, ‘আমি যখন জানতে পারি ঘটনাটি, তখনই সিদ্ধান্ত নিই লিজা যদি আমার মেয়ে হতো, ওর জন্য আমার যা করা উচিত ছিল, লিজার জন্য তা–ই করব এবং তা–ই করেছি, চিকিৎসার সব খরচ বহন করেছি, আরও করতে চাই, সে সুস্থ হয়ে অন্যান্য শিশুর মতো দৌড়ঝাঁপ করবে, স্কুলে যাবে, এটাই আমি চাই।...লিজাকে ঈদের পরে আবারও একবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়ার ব্যবস্থা করব।’

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, লিজাকে রংপুরে চিকিৎসার সময় রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হলে করোনা সংকটের কারণে কেউ রক্ত দিতে রাজি হচ্ছিল না, পুলিশ সুপার মহোদয়ের কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে লালমনিরহাটের কয়েকজন পুলিশ সদস্য রংপুরে গিয়ে লিজাকে রক্ত দেন, না হলে রক্তের অভাবে তাকে বাঁচানোই কঠিন হতো।

লিজার মা সামিরন নেছা বলেন, ‘আমি লিজাকে জন্ম দিয়েছি, আর আবিদা সুলতানা এসপি স্যার লিজার বিপদের দিনে তার পাশে থেকে তাকে নতুন জীবন পেতে সাহায্য করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ এসপি স্যারের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া ছাড়া আর কিছু দেওয়ার সামর্থ্য নেই।’