Thank you for trying Sticky AMP!!

অনুমোদন নেই ৫০ শয্যার, উদ্বোধন করেছেন সাংসদ

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখনো অনুমোদন মেলেনি। কিন্তু স্থানীয় সাংসদ আফজাল হোসেন গত ১৩ এপ্রিলই ফিতা কেটে উদ্বোধন করে গেছেন। এদিকে চিকিৎসক-সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যায় উন্নীত করার জন্য গত ৮ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনটি প্রক্রিয়াধীন। তবে সাড়ে আট কোটি টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এদিকে ৩১ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের পদ রয়েছে নয়টি। এর মধ্যে চিকিৎসক আছেন মাত্র তিনটি পদে। তাঁদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দাপ্তরিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অন্য দুই চিকিৎসকের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে একজন উপস্থিত থাকেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অন্যান্য পদেও লোকবলের সংকট রয়েছে। ৩৯টি ক্যাটাগরিতে লোকবল থাকার কথা ১৭৭। এর মধ্যে পদ শূন্য ২৬টি।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হেলিশ রঞ্জন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘উদ্বোধন হয়ে গেলেও আমরা এখনো ৫০ শয্যার অনুমোদন পাইনি। আমি আবেদন করেছি, যা প্রক্রিয়াধীন।’ তিনি আরও বলেন, লোকবল কম থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা দিতে নানা সমস্যা হচ্ছে।
গত সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন ভবনে ৩১-৫০ শয্যার উন্নীতকরণের একটি ফলকে উদ্বোধকের নাম লেখা রয়েছে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ আফজাল হোসেনের।
মঙ্গলবার একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে সাংসদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোবারক হোসেন বলেন, সাংসদ আসলে ভবনের উদ্বোধন করেছেন।
এদিকে সোমবার বেলা দেড়টায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছাড়া আর কোনো চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও দেড়টার আগেই তা বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে মোবারক হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘চিকিৎসকেরা নিয়মিত নন। প্রায়ই তাঁদের এখানে পাওয়া যায় না। তাঁরা আসেন শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে, আর বেতন উত্তোলন করতে। কিছুদিন আগে আমি এই অভিযোগ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজির সামনেই করেছিলাম।’
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির দুটি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে একটি বিকল। সচলটিতেও সেবা বন্ধ রয়েছে তিন বছর ধরে। একমাত্র টেকনিশিয়ান চার বছরের জন্য প্রশিক্ষণে গেছেন। আরও এক বছর পর ফিরে আসবেন। তখন এক্স-রে মেশিন সচল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ল্যাবরেটরি বিভাগের মেডিকেল টেকনিশিয়ান রইছ উদ্দিন বলেন, ‘সোমবার নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ১১ জন রোগীকে সেবা দিয়েছি।’
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সোমবার অন্তর্বিভাগে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৩। উপজেলার বলিয়াদী ইউনিয়নের ইকবাল হোসেন (২৮) পেটের ব্যথা নিয়ে দুদিন আগে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, সকালে একবার শুধু চিকিৎসক এসে দেখে গেছেন। এখান থেকে কোনো ওষুধ দেওয়া হয়নি।
তবে জ্যেষ্ঠ নার্স বিউটি রানী সাহা বলেন, সব ধরনের ওষুধের জোগান দিতে না পারলেও গ্যাসট্রিক, ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে।