Thank you for trying Sticky AMP!!

অবৈধ বালু পরিবহনে বিদ্যালয় মাঠে রাস্তা

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার শতবর্ষের পুরোনো ধলা উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয়ের মাঠের মাঝ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবৈধভাবে তোলা বালু সহজে পরিবহনের জন্য এ রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক সূত্র জানায়, উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের ধলা গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বিদ্যালয়টির অবস্থান। ১৮৯৩ সালে ধলার জমিদার বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এটিতে এক হাজার ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে।
এলাকার কয়েকজন জানান, সম্প্রতি বিদ্যালয়সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার হিড়িক পড়ে। নদের কাছে হওয়ায় তোলা বালু বিদ্যালয়টির মাঠের মধ্য দিয়ে নিতে হয়। সহজে বালু পরিবহনের জন্য ব্যবসায়ীরা বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদকে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা দিয়ে মাঠে রাস্তা করার অনুমতি নিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সাবেক সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দুই বছর ধরে রাস্তার জন্য দেনদরবার চলছিল। কিন্তু আমরা কমিটিতে থাকাকালে বিদ্যালয়ের পরিবেশের কথা চিন্তা করে অনুমতি দিইনি। সম্প্রতি নতুন নির্বাচন হয়েছে। অপূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়েই বর্তমান সভাপতি অনুমতিটা দিয়েছেন।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এটি ময়মনসিংহ অঞ্চলের অন্যতম বড় মাঠ। এলাকার অধিকাংশ খেলা এখানে হয়। এখনো এলাকাবাসী এ মাঠে সভা-সমাবেশ করেন। এখানে ঈদের জামাতও অনুষ্ঠিত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, রাস্তাটা যেভাবে করা হয়েছে, তাতে বালুভর্তি ট্রাক যখন নদী থেকে ওপরে উঠছে, তখন উচ্চশব্দের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মন দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। চারদিক ধুলায় আচ্ছন্ন হচ্ছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠে রাস্তা দিয়েই কিছুক্ষণ পরপর বালুর ট্রাক চলছে। বালু ব্যবসায়ী রইসউদ্দিন বলেন, ‘আমি সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে রাস্তা ইজারা নিয়েছি। শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য আলাদা মাঠ আছে।’ তিনি জানান, প্রতিদিন কতসংখ্যক ট্রাক চলবে, তা নির্ভর করছে রাস্তাটি পুরো চালু হওয়ার ওপর। তবে লোকসানের শিকার হবেন না বলেই আশা করছেন তিনি। এখন ট্রাকপ্রতি ২০০ টাকা নিচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক শামছুল হুদা বলেন, ‘বিদ্যালয়ের (পরিচালনা) পর্ষদ রাস্তার অনুমতি দেওয়ায় আমার আর কিছু করার নেই।’
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সভাপতি হারুন অর রশিদ জানান, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সুপারিশেই রইস উদ্দিনকে মাঠে রাস্তা করতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। পর্ষদ যা করেছে বৈধভাবেই করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ বলেন, ‘স্কুলের স্বার্থেই রাস্তার জায়গা দিতে সুপারিশ করেছি। মাঠটি তো পড়েই থাকে। মাঝখান থেকে স্কুলের কিছু আয় হলো।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে দ্রুত এ রাস্তা বন্ধের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছি। তারা জানিয়েছে, স্কুলের একটি নতুন ভবন করতে রাস্তা ইজারা দিয়ে টাকা নেওয়া হয়েছে। আর এখানে আগে থেকেই একটি রাস্তা ছিল। তার পরও আমি বলেছি, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’