Thank you for trying Sticky AMP!!

অস্বাস্থ্যকর সড়ক মহাখালীর 'স্বাস্থ্য জোনে'

​​বৃষ্টি হোক না হোক, মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এলাকার সড়কটির এই অবস্থা থাকে প্রায় সব সময়। গত সোমবার দুপুরে তোলা ছবি l প্রথম আলো

দেখে মনে হতে পারে, এটি অজপাড়াগাঁয়ের কোনো অবহেলিত সড়ক। যেখানে নজর দেওয়ার মতো উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নেই। কিন্তু সড়কটি অজপাড়াগাঁয়ের নয়, এটি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মহাখালী এলাকার। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (আইপিএইচ) থেকে এক কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি সাততলা বস্তি সড়ক নামে পরিচিত।
এই সড়ক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। দীর্ঘদিন সড়কটির প্রয়োজনীয় সংস্কার ও মেরামত হচ্ছে না। অথচ মহাখালীর ‘স্বাস্থ্য জোন’ নামে পরিচিত এই সড়কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের স্থাপনা রয়েছে। যেমন সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা কাউন্সিল, প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। সরকারি হাসপাতালের যন্ত্রপাতি মেরামত করার ওয়ার্কশপও রয়েছে এখানে। রয়েছে গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়। ক্যানসার হাসপাতাল, গণপূর্ত বিভাগ, আইপিএইচের স্টাফ কোয়ার্টারের হাজার হাজার লোক প্রতিদিন এই পথে যাতায়াত করেন। সাততলা বস্তিবাসীর চলাচলের অন্যতম পথও এটি। এ সড়কে চলে ইজিবাইক, মিশুক ও রিকশা। চলতে গেলেই পড়ে যাওয়ার ভয়। প্রতিদিন কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে।
সংক্রামক ব্যাধি০ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী এ পথে আসতে গিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। রোগীর সঙ্গে আসা লোকজনও পড়েন অস্বস্তিতে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তিন দিন আগের অর্থাৎ শনিবারের বৃষ্টির পানিও জমে আছে সড়কে। অনেক স্থান কাদায় ভরা। কোনো ফুটপাত নেই। রাস্তার দুপাশে দোকানপাট। একটি ফোন-ফটোকপি করার দোকানের কর্মচারী রকিব মিয়া ও পার্শ্ববর্তী দোকানিরা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, দ্রুত বেগে কোনো যানবাহন চললেই দোকানে এসে পড়ে ময়লা পানি ও কাদা।
এলাকার ফোরকান আলী, আবদুল মতিনসহ অন্তত সাতজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, স্বাস্থ্য জোনে সার্বক্ষণিকভাবে বিরাজ করছে অস্বাস্থ্যকর অবস্থা। সড়কের পাশের নর্দমাগুলো ভরে আছে ময়লা-আবর্জনায়। প্রতিনিয়ত রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে। কারও কোনো নজর নেই। তাঁদের প্রশ্ন, আর কত দিন তাঁদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে?
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সড়কটির মালিকানা নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় এর মেরামতের দায়িত্ব কোনো সংস্থা নিতে চায় না। স্বাস্থ্য জোনে অবস্থিত বলে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সড়কটির মালিকানা দাবি করে আসছে। ডিএনসিসির স্থানীয় অঞ্চলে যোগাযোগ করলে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হস্তান্তর করা হলেই সড়কটির প্রয়োজনীয় সংস্কার ও মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হতে পারে।
যোগাযোগ করা হলে ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মো. কুদরতউল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে আঞ্চলিক কার্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহাখালীর স্বাস্থ্য স্থাপনাগুলোর মেরামত ও সংস্কারের দায়িত্বে রয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। ওই বিভাগের কোয়ার্টার থাকায় এলাকাবাসী এলাকায় বসবাসরত কর্মকর্তাদের কাছে সড়ক মেরামতের মৌখিক আবেদন জানান। জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগ কয়েকজন প্রকৌশলী জানান, সড়কটি মেরামত ও সংস্কার খুবই জরুরি। তাঁরা নিজেরাই প্রতিদিন সহ্য করছেন। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তাঁদের কর্তৃপক্ষও কোনো কাজ করতে পারছে না। তবে সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে তাঁরা অনুরোধ জানিয়েছেন।