Thank you for trying Sticky AMP!!

আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ আরও ৪ জনের মৃত্যু

খড়কুটোর আগুন পোহাতে গিয়ে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ছোট শিশু রুমানা আক্তারের গায়ের জামায় আগুন ধরে যায়। আগুনে তার বুক ও পিঠ পুড়ে গেছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ১৫ জানুয়ারি। ছবি: মঈনুল ইসলাম

শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫৬ জনের মধ্যে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ জনে। চিকিৎসাধীন আছেন ৫২ জন। আগুন পোহানোর সময় অসাবধানতায় তাদের গায়ের কাপড়ে আগুন ধরে যায়।

গত কয়েক দিন ধরেই সারা দেশের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলের শীতের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। তাই সেখানকার খেটে-খাওয়া মানুষ ঠান্ডার হাত বাঁচতে পোয়াল, ধান গাছের ছোবড়া ও খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন তাপাতে বসে যান। আর এটি করতে গিয়ে প্রায়ই অসাবধানতাবশত তাদের গায়ে কাপড়ে আগুন ধরে যায়।

পঞ্চগড়ের ধাক্কামারা এলাকার বৃদ্ধা সাহেদা খাতুন শীত সহ্য করতে না পরে ঘরের ভেতর আগুন জ্বালিয়ে ছিলেন। সেই আগুনে শরীর পুড়ে বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১৫ জানুয়ারি: ছবি: মঈনুল ইসলাম

গতকাল রোববার দিবাগত রাত থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত যে চারজন মারা গেছে এরা হলো লালমনিরহাটের সদর উপজেলার রাজপুর এলাকার সুকু মনি (৭০), গাইবান্ধা সদরের টেংগার এলাকার জয়নুল (৩৫), রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি এলাকার হ্যাচো বেগম (৬৫) ও রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার জামিরন বেওয়া (৮০)।

এর আগে ৫ জানুয়ারি থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত রংপুর মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মারা যাওয়া ১০ জন হলো ঠাকুরগাঁও শহরের থানাপাড়ার আঁখি আক্তার (৪৫), রংপুর শহরের মাহিগঞ্জের মনি বেগম (২৫), সদরের নজিরের হাট এলাকার আফরোজা খাতুন (৩০), জুম্মাপাড়ার রুমা খাতুন (৬৫) ও কাউনিয়া উপজেলার গোলাপী বেগম (৩০), লালমনিরহাট সদরের শাম্মী আখতার (২৭), পাটগ্রাম উপজেলার ফাতেমা বেগম (৩২) ও আলো বেগম (২২), নীলফামারী সদরের রেহেনা বেগম (২৫) ও মারুফা খাতুন (৩০)।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক নুর আলম সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন জেলায় খড়কুটা ও পোয়াল জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে এখনো ৫২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জন শিশু, ৮ জন পুরুষ ও ৩৩ জন নারী।

আরেক চিকিৎসক তৌহিদ আলম বলেন, অগ্নিদগ্ধদের অধিকাংশেরই ৪৫ থেকে ৫৫ শতাংশ ঝলসে গেছে। ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তাদের অনেকের ভাষ্য, আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতায় শরীরে জড়ানো কাপড়ে আগুন ধরে যায়।

অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ আরজিনা বেগমের (৩০) শরীর ৫৩ ভাগ পুড়ে গেছে। তাঁর পাশে থাকা স্বামী মোস্তফা মিয়া বলেন, গত বুধবার পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার হাতিডোবা এলাকায় প্রচণ্ড শীতের মধ্যে খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন তাপাতে গিয়ে আরজিনার শাড়িতে আগুন ধরে যায়।

হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক তৌহিদ আলম বলেন, আমাদের সাধ্যমতো আমরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। অগ্নিদগ্ধ হওয়া অধিকাংশই ৪৫ থেকে ৫৫ শতাংশ আগুনে ঝলসে গেছে।