Thank you for trying Sticky AMP!!

আজ পঁচিশে বৈশাখ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মবার্ষিকী আজ পঁচিশে বৈশাখ। কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে ১২৬৮ বঙ্গাব্দে এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর-সারদা দেবী দম্পতির চতুর্দশ সন্তান ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার জয়ের মধ্য দিয়ে কবিগুরু তাঁর অতুলনীয় সৃজনী প্রতিভায় বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত করেন। আমাদের জাতীয় সংগীতের রচয়িতাও তিনি।
জন্মের দেড় শতাধিক বছর পেরিয়ে গেলেও বাঙালির নিত্যদিনের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতি এখনো দীপ্যমান। তাঁর জন্মদিনটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙালির কাছেই এক আনন্দঘন উৎসবের দিন। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ কবির স্মৃতিধন্য স্থানগুলোতে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কবিগুরুর জন্মদিনের উৎসব পালিত হয়। এ ছাড়া সারা দেশেই রবীন্দ্রজয়ন্তীর অজস্র অনুষ্ঠান আয়োজন করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় প্রিয় কবির স্মৃতির প্রতি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা পরিমাণে বিপুল, বিষয়ে বৈচিত্র্যময়। কবিতা, সংগীত, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, প্রবন্ধ, ভ্রমণ, শিশুতোষ রচনাসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখাই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর মেধা-মনন-সৃজনশীলতায়। প্রায় একক প্রচেষ্টায় তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে আধুনিক করে তুলেছিলেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে চিত্রকলা চর্চায় মনোনিবেশ করে সেখানেও অনন্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
রবীন্দ্রনাথের রচনায় কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে মানব, প্রকৃতি ও দেশপ্রেম। এখনো বাঙালি তার হৃদয়ের সব আবেগ-অনুভূতির ভাষা খুঁজে পায় রবীন্দ্রনাথের কালজয়ী রচনায়।
বাংলা সাহিত্যের এই প্রাণপুরুষ সমাজকল্যাণমূলক কাজেও রেখেছেন বিশেষ ভূমিকা। শিক্ষাবিস্তার, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নসহ তাঁর জনকল্যাণমূলক কাজগুলোও এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান: এ বছর জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্রজয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠান হবে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় শাহজাদপুর পাইলট হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের রবীন্দ্রজয়ন্তীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সভ্যতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’। অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা দেবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও তিন দিনব্যাপী কবিগুরুর ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, নওগাঁর পতিসর ও খুলনার দক্ষিণডিহিতে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় পালিত হবে জাতীয় পর্যায়ের কর্মসূচি। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।
বাণী: কবিগুরুর জন্মদিনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে রবীন্দ্রচেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কল্যাণকর সমাজ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের মননে বিশ্বকবির ব্যঞ্জনাময় উপস্থিতি শোষণ, বঞ্চনা, সাম্প্রদায়িকতা ও অমানবিকতা প্রতিরোধে বাঙালির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখবে।’
জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, কাঙ্ক্ষিত সোনার বাংলা গড়ার জন্য রবীন্দ্রচেতনা অনুপ্রাণিত করবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘কবির রচনা এখনো সমাজের অনাচার, বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে ও পরমতসহিষ্ণু হতে আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়।’