Thank you for trying Sticky AMP!!

আন্দোলনে একাত্মতা ঢাবি শিক্ষার্থীদের, শাহবাগে অবস্থান

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সাইফুল ইসলাম

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এতে সেখানে যানজটের সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে শাহবাগে বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি নুরুল হক। ছবি: সাইফুল ইসলাম

গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বসুন্ধরায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে নদ্দা এলাকায় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী। এ ঘটনার প্রতিবাদে সেখানে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। আজ সকালেও শিক্ষার্থীরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। বিইউপিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শ শিক্ষার্থী এতে যোগ দিয়েছেন। এ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বেলা ১১টার দিকে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন সিটি কলেজ, ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ স্কুল, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি বিজ্ঞান কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

সড়ক দুর্ঘটনার পরবর্তী শিকার নিজে কি না—এমন প্রশ্ন রেখে সড়কে লিখছেন আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী। ছবি: সাইফুল ইসলাম

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গতকালই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁদের পরিচালিত ফেসবুক পেজে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তবে গতকাল তাঁরা আন্দোলনে অংশ নেননি। আজ বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অন্তত ৫০০ শিক্ষার্থী শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করছেন। অবরোধের কারণে শাহবাগ এলাকার মূল সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় জাদুঘরের সামনের বিকল্প রাস্তা দিয়ে কিছু কিছু গাড়ি চলছে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে শিক্ষার্থীরা। ছবি: সাইফুল ইসলাম

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া হৃদয় হোসেন নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, কিছুদিন আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে বড় আন্দোলন হয়েছে। সরকার অনেক আশ্বাস দিলেও সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হয়নি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, সড়ক দুর্ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর তাঁর নামে পদচারী–সেতু তৈরি করাই কি সমাধান? দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাস্তায় বসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’,‘আমাদের দাবি একটাই, নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘প্রশাসন ভুয়া’ ইত্যাদি বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এ ছাড়া তাঁরা মোট আট দফা দাবি জানাচ্ছেন।

এক গাড়ির ওপর ভুয়া লিখে ঘিরে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সাইফুল ইসলাম

শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবি হলো পরিবহন সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং প্রতি মাসে বাসচালকের লাইসেন্সসহ সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষা করতে হবে। আটক হওয়া চালক ও সম্পৃক্ত সবাইকে দ্রুততম সময়ে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আজ থেকেই ফিটনেসবিহীন বাস ও লাইসেন্সবিহীন চালককে দ্রুততম সময়ে অপসারণ করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সব স্থানে আন্ডারপাস, স্পিডব্রেকার ও পদচারী–সেতু নির্মাণ করতে হবে। চলমান আইনের পরিবর্তন করে সড়কে হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দায়িত্ব অবহেলাকারী প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্টপেজ এবং যাত্রীছাউনি করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ছাত্রদের জন্য হাফপাস অথবা আলাদা বাস সার্ভিস চালু করতে হবে।

মোটরসাইকেলচালককে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সাইফুল ইসলাম

এর আগে গত বছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। সারা দেশেই তা ছড়িয়ে পড়ে। ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত চলে ওই আন্দোলন। সেই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন নিহত আববারও। নিরাপদ সড়কের দাবিতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছবি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছিলেন তিনি।

বিক্ষোভের কারণে যানবাহন না পেয়ে হেঁটে রওনা দিয়েছে পরিবার। ছবি: সাইফুল ইসলাম