Thank you for trying Sticky AMP!!

আপনজন ফেলে শরণার্থী ক্যাম্পে দুই ভাই

একজন শফিকুল্লাহ (১২); আরেকজন রফিকুল্লাহ (৮)। তারা দুই ভাই। রফিকুল্লাহ বাক্‌প্রতিবন্ধী। এই দুই রোহিঙ্গা শিশুর বাড়ি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলায়। গ্রামের নাম হোয়াইক্ষং। এখন তারা কক্সবাজারের উখিয়ার থ্যাংখালী আশ্রয়কেন্দ্রে থাকছে। মা-বাবা ও পাঁচ ভাইবোনের কোনো খোঁজ তাদের জানা নেই। শুধু এটুকুই জানে, যেখানে শেষবারের মতো মা-বাবা ও অন্য ভাইবোনদের তারা দেখেছিল, সেখানে গুলি হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গেছে।

শফিকুল্লাহ যখন সেদিনের ঘটনা বলছিল, তখন বারবার গুমরে কেঁদে উঠছিল। তবে রফিকুল্লাহ ঘটনার বর্ণনা করছিল হাতের আঙুল দিয়ে বন্দুক বানিয়ে গুলি করার ভঙ্গি দেখিয়ে।
ক্যাম্পে এ দুই ভাইকে দেখতে আসছিল অনেকেই। তাদের পরিচিতজনেরা সব সময় আশপাশেই ছিল। তারাও বলছিল ঘটনার দিনের কথা। তবে শফিকুল্লাহ পুরো ঘটনা দেখেছে কাছ থেকে। সে জানায়, কোরবানির ঈদের তিন দিন আগে খুব সকালবেলা তার বাবা নূর ছালাম তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। বাবার হাত ধরেই গ্রামের খালপাড়ে আসে তাদের পুরো পরিবার। সেখানে আরও বহু মানুষ ছিল। এর মধ্যেই গ্রামের বড়দের লক্ষ্য করে হঠাৎ গুলি শুরু হয়।
সেসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানকার একটি ঘরে। তার মাথায় ছুরি দিয়ে কোপ দেওয়া হয়। এরপর সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। যখন জ্ঞান ফেরে, তখন কক্ষ থেকে বের হয়ে পাশের একটি ধানখেতে লুকিয়ে পড়ে। সারা রাত সে ওই ধানখেতে লুকিয়ে ছিল। এর এক দিন পর গ্রামের পরিচিত মানুষের দেখা পায় সে। তাদের সঙ্গেই কক্সবাজারের টেকনাফে এসে শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেয় শফিকুল্লাহ।
বাক্‌প্রতিবন্ধী রফিকুল্লাহ কীভাবে বেঁচে কক্সবাজারে এসেছে, সে তা বলতে পারে না। ইশারায় সম্ভবত ওই দিনের ঘটনা বলার চেষ্টা করে কিন্তু তা অন্যরা বুঝতে পারে না। ক্যাম্পের কয়েকজন জানালেন, গ্রামের পাশেই একটি পাহাড়ে ছিল রফিকুল্লাহ। সেখান থেকে তাঁরা তাকে কক্সবাজারে নিয়ে আসেন। এখানে এসেই দুই ভাইয়ের দেখা হয়।