Thank you for trying Sticky AMP!!

আপিল করেছেন কায়সার

সৈয়দ মো. কায়সার

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে পাওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মো. কায়সার।
আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিলটি করেন কায়সারের আইনজীবী। পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আপিলে খালাসের আরজি জানানো হয়েছে। এতে ৫৬টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ৫০ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি দেওয়া হয়েছে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর কায়সারকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ এ রায় দেন।
একাত্তরে ধর্ষণের দায়ে প্রথম ফাঁসি কায়সারেরমানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো মামলায় ধর্ষণের দায়ে আসামিকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে ধর্ষণের দায়ে তিনটি পৃথক মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং পলাতক বিএনপি নেতা এম এম জাহিদ হোসেনকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে অন্য অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় ধর্ষণের সাজা আলাদা করে দেননি আদালত।
কায়সারের বিরুদ্ধে গঠন করা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে ১৪টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের দুটিসহ সাতটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। বাকি সাতটি অভিযোগের মধ্যে চারটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড, একটিতে ১০ বছর, একটিতে সাত বছর ও একটিতে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে সর্বোচ্চ সাজা পাওয়ায় কারাদণ্ডের সব সাজা মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে একীভূত হয়ে যাবে।
রায়ে বলা হয়, একাত্তরে কনভেনশন মুসলিম লীগের নেতা কায়সার হবিগঞ্জের মাধবপুরে তাঁর বিশ্বস্ত অনুসারী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে একটি স্থানীয় আধা সামরিক বাহিনী গঠন করেন। নিজের নামে তিনি এর নাম দেন কায়সার বাহিনী। এ বাহিনীর নিজস্ব পোশাক ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বাহিনী হবিগঞ্জ ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে ত্রাস সৃষ্টি করে। পাকিস্তানি সেনাদের পাশাপাশি তারা নানা ধরনের নৃশংস অপরাধ করে।
এরশাদ সরকারের কৃষি প্রতিমন্ত্রী কায়সার ২০১৩ সালের ২১ মে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিচারের প্রায় পুরো সময় তিনি জামিনে ছিলেন। গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ৯ মার্চ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলে। রাষ্ট্রপক্ষের ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে প্রথমবারের মতো একজন যুদ্ধশিশু ক্যামেরা ট্রায়ালে (সাক্ষীর পরিচয় গোপন করে শুনানি) সাক্ষ্য দেন। ২০ আগস্ট মামলার কার্যক্রম শেষে রায় অপেক্ষমাণ রাখা হয়।