Thank you for trying Sticky AMP!!

আমেরিকা-ইউরোপের চেয়ে দেশে করোনায় মৃত্যুর হার কম: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং ভ্যাকসিন বিষয়ে আলোচনা সভা। আজ রাজধানীর একটি হোটেলে

‘সব মৃত্যুই দুঃখজনক, তবু আমেরিকা, ইউরোপ এমনকি ভারতের চেয়ে আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যুর হার অনেক কম। আমেরিকায় প্রতি ১০ লাখে ৭৫০ জন, ইউরোপে ১ হাজার জন, ভারতে ১০০ জন আর আমাদের এখানে ৩৫ থেকে ৩৮ জন।’

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং ভ্যাকসিন বিষয়ে আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা বলেছেন।

করোনার প্রথম ঢেউ মোকাবিলায় সাফল্য এসেছে, অর্থনীতি সচল আছে, এমন মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সীমিত সামর্থ্য নিয়েই আমাদের চিকিৎসক এবং সর্বস্তরের স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এখন চিকিৎসার অভিজ্ঞতা এবং হাসপাতালগুলোর প্রয়োজনীয় সুবিধাও বেড়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া কোভিড-১৯–এর টিকা বাংলাদেশও পাবে। এ জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোও টিকা পাবে।

বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেসব টিকার অনুমোদন দেবে, আমরা সেই টিকাই আনাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার উদ্যোগের ক্ষেত্রে সরকারি বেসরকারি এমন আলাদা কোনো বিভাজন নেই। এটি সারা দেশের সমস্যা। সরকারি–বেসরকারি সবাই মিলে এক হয়ে একে মোকাবিলা করতে হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। দেশের সব সরকারি হাসপাতালে এর মধ্যেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য দরকারি প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু হয়েছে।’ তিনি চিকিৎসকসহ সর্বস্তরের চিকিৎসাকর্মী এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তাঁদের ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দেশের কোথাও ওষুধের সংকট হয়নি। ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে দরকারি ওষুধ উৎপাদন করেছে এবং ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত তা পৌঁছে দিয়েছে।

করোনার টিকা এলে কে কীভাবে পাবে, তার নীতিমালা করা হচ্ছে। কোনো দেশেই একসঙ্গে সবাইকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে না। আমাদেরও ধৈর্য ধরতে হবে। পর্যায়ক্রমে সবাই টিকা পাবেন।
এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

করোনা চিকিৎসার সুবিধার্থে বিপিএমসিএ চিকিৎসাবিষয়ক যন্ত্রপাতি ও উপকরণের শুল্ক রেয়াতের আবেদন জানিয়েছিল। মন্ত্রী এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে বলেন, যেহেতু বিষয়টি তাঁর মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে নেই, তাই তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নুর বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় আমরা থমকে যাইনি। একটু একটু করে এগিয়েছি। অনেক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির দুঃখজনক ঘটনার পাশাপাশি চিকিৎসা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের বেশ কিছু সক্ষমতাও অর্জিত হয়েছে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, ‘করোনার টিকা এলে কে কীভাবে পাবে, তার নীতিমালা করা হচ্ছে। কোনো দেশেই একসঙ্গে সবাইকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে না। আমাদেরও ধৈর্য ধরতে হবে। পর্যায়ক্রমে সবাই টিকা পাবেন।’

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ ও সভাপতিত্ব করেন বিপিএমসিএর সভাপতি এম এ মুবিন খান। তিনি বলেন, দেশের ১৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে করোনার চিকিৎসায় বিশেষ ইউনিট করা হয়েছে। এ পর্যন্ত তাঁরা ২০ হাজার করোনা রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়েছেন। এ ছাড়া আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৫ হাজার, নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে লক্ষাধিক। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা প্রায় এক লাখ। তাঁরা করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে প্রস্তুত।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম–সাধারণ সম্পাদক-১ এবং ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন বিপিএমসিএর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল হাসান, আইনবিষয়ক সম্পাদক গাজী মিজানুর রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, সৈয়দ মোরশেদ হোসেন, এম এ মুকিদ প্রমুখ।