Thank you for trying Sticky AMP!!

আলট্রাসনোগ্রাফিতে শিশুর লিঙ্গপরিচয় জানা নিষেধ

প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা নারীর গর্ভের শিশু ছেলে নাকি মেয়ে তা জানার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। এ–সংক্রান্ত একটি আদেশ ডাকযোগে জেলার সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন শাহ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অন্তঃসত্ত্বা নারীরা সরকারি–বেসরকারি হাসপাতাল ও বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে যান। গর্ভের সন্তানটি ছেলে নাকি মেয়ে তাঁরা নিশ্চিত হতে চান। সম্প্রতি আলট্রাসনোগ্রাফির প্রতিবেদন নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়। এই প্রেক্ষাপটে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত সোমবার ডাকে এ–সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৪ নভেম্বর হাসপাতালে বেলা সোয়া ১১টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সদর উপজেলার সুহিলপুর উত্তরপাড়ার এলাকার শাহ আলমের স্ত্রী তামান্না আক্তার একটি ছেলেশিশুর জন্ম দেন। এই শিশুর ভূমিষ্ঠ হওয়ার প্রায় ১৫ মিনিট পর একই অস্ত্রোপচার কক্ষে জেলা শহরের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা সজীব দাসের স্ত্রী দীপ্তি রানী দাস অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি মেয়েশিশুর জন্ম দেন। পরে দুই নবজাতককে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মেয়েশিশুটিকে কোলে নেওয়ার পরপর দীপ্তির স্বামী সজীব দাস, মা শোভা সরকার ও শাশুড়ি শিপ্রা দাস দাবি করেন এটি দীপ্তির সন্তান নয়। তাঁরা হাসপাতালের চিকিৎসক, তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন ও সিভিল সার্জন শাহ আলমের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। তাঁরা দাবি করেন, আলট্রাসনোগ্রাফি করার পর তাঁদের জানানো হয়েছিল, দীপ্তি ছেলেসন্তানের জন্ম দেবেন। কিন্তু আলট্রাসনোগ্রাফির প্রতিবেদনে ছেলে বা মেয়ে নবজাতকের কোনো বিষয়ে কিছুই উল্লেখ ছিল না। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সিভিল সার্জন জেলার সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় না জানানোর বিষয়ে ওই আদেশ জারি করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম দিন ওই প্রসূতির পরিবার এই দাবি করেছিল। পরে তাঁদের কেউ আমাদের কাছে আর আসেননি। গত বুধবার মেয়েসন্তান নিয়ে দীপ্তি নামের ওই প্রসূতি হাসপাতাল থেকে বাড়ি গেছেন।’

সিভিল সার্জন শাহ আলম বলেন, সম্প্রতি মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক একটি সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে প্রসূতির গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় নির্ণয় করা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন থেকে কোনো হাসপাতালে বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভের শিশু ছেলে না মেয়ে তা নির্ধারণ করা যাবে না।