Thank you for trying Sticky AMP!!

ইজিবাইকে বাবার সঙ্গে শৈশব কাটানো মাওয়া পেল ঘর

ইজিবাইকে বাবার সঙ্গে দিনরাত কাটানো শিশু জান্নাতুল মাওয়া সরকারি জমিসহ নতুন বাড়ি পেল। গতকাল রোববার বিকেলে যশোরের জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ শিশু মাওয়ার হাতে বাড়ির চাবি তুলে দেন।

যশোরের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. আবদুল আওয়াল তাদের জমিসহ একটি বাড়ি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মাওয়া ও তার বাবাকে জমিসহ ও বাড়ি হস্তান্তর করা হয়।

বাবার সঙ্গে ইজিবাইকে (অটো) দিনরাত কাটানো জান্নাতুল মাওয়াকে নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর তাদের ডেকে নিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক যশোর সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের মন্ডলগাতী গ্রামে জান্নাতুল মাওয়ার বাবা মুরাদুর রহমানের নামে ৫ শতক খাস জমির ওপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অর্থায়নে এক লাখ টাকা ব্যয়ে টিনশেডের একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এর মধ্যে জেলা প্রশাসক আবদুল আওয়াল বদলি হয়ে চলে যান। কিন্তু তাঁর প্রতিশ্রুতি বিফলে যায়নি। ঘর পেয়ে মাওয়া ও তার বাবা ভীষণ খুশি।

যশোরের জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ শিশু মাওয়ার হাতে বাড়ির চাবি তুলে দেন। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

জান্নাতুলের বয়স যখন আড়াই বছর তখন তার মা তাকে বাবার কাছে রেখে চলে যায়। মেয়েকে দেখার কেউ নেই। তাই মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই সারা দিন ইজিবাইক চালাতেন। ইজিবাইকের গ্যারেজে একটু থাকার জায়গা দিয়েছিলেন গ্যারেজ মালিক। সেখানেই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। হোটেলে খাওয়াদাওয়া সারতে হতো। পরে বাবা-মেয়ে শহরের নাজির শংকরপুর এলাকায় চাতাল মোড়ে একটি ঘর ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন। জান্নাতুলকে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন বাবা।

ঘরের চাবি দেওয়ার পর জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ মা হারা জান্নাতুলের প্রতি এলাকাবাসীর ভালোবাসা কামনা করেন। পাশাপাশি তার খোঁজখবর রাখতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহীম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ।

মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে খুশি বাবা-মেয়ে। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

এদিকে,নতুন ঘর পাওয়া জান্নাতুলের বাবা মুরাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ঘর পাওয়ায় আমরা খুব খুশি। শিশু মাওয়াকে নিয়ে ইজিবাইকে দিনভর ঘোরার দিন শেষ হলো। আর এই এলাকার সকল প্রতিবেশীর সঙ্গে সব সময় ভালো সম্পর্ক বজায় রাখব। ’

স্থানীয় বাসিন্দা কার্তিক চন্দ্র পাল বলেন, ‘মা হারা মেয়ে আমাদের এলাকায় সরকারের ঘর পেয়েছে, এতে আমরাও খুশি। আমরা অবশ্যই শিশুটির ভালোমন্দ সব বিষয়ে খবর রাখব।’