Thank you for trying Sticky AMP!!

ইরানের সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবাসেন

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাওফর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তেজগাঁও, ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি। ছবি: বাসস

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিপুল জয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাওফর। শেখ হাসিনাকে একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের সব মানুষ আপনাকে ভালোবাসি।’ তিনি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর সুষম উন্নয়ন নীতিমালার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাওফর আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় মোহাম্মদ রেজা নাওফর এসব কথা বলেন।

বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই উম্মাহর একসঙ্গে থাকা উচিত। তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সৃষ্ট সংঘাতে ওই দেশগুলোর জনগণকেই ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এ জন্য মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে দুদেশের মধ্যে অভিন্ন সাংস্কৃতিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে, “সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।”’ ইরানের জনগণকে সাহসী হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইরানের অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হচ্ছে।

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের অসাধারণ দিকগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে তাঁর সরকার কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশে নামিয়ে এনেছি এবং আমাদের উন্নয়ন নীতিমালা হচ্ছে গ্রামকেন্দ্রিক।’ বাংলাদেশে বিরাজমান ধর্মীয় সম্প্রীতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে সব ধর্মের মানুষ একত্রে যেকোনো ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করে।’ তিনি বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালীন তাঁর সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন রাষ্ট্রদূতকে। প্রধানমন্ত্রী ২০১২ সালে ষষ্ঠ ন্যাম সম্মেলন এবং ১৯৯৭ সালে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে তাঁর ইরান সফরের কথা স্মরণ করেন।

ইরানের রাষ্ট্রদূত বৈঠকে ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর দলের বিপুল বিজয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। রেজা নাওফর শেখ হাসিনাকে একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘আমরা ইরানের সব মানুষ আপনাকে ভালোবাসি।’ তিনি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর সুষম উন্নয়ন নীতিমালার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।

বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের উল্লেখ করে রেজা নাওফর বলেন, ‘আমাদের এই সম্পর্ককে আমাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের মধ্যে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো সহযোগিতা রয়েছে। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কও সুন্দর অবস্থানে রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এটি বর্তমানে সন্তোষজনক অবস্থায় নেই। ‘পশ্চিমা অবরোধ সত্ত্বেও ইরান এগিয়ে যাচ্ছে’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করে যাচ্ছি, কেননা আমরা কোনো যুদ্ধবাজ দেশ নই। এই অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেকোনো উদ্যোগকে ইরান স্বাগত জানাবে’, বলেন ইরানের রাষ্ট্রদূত।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।