Thank you for trying Sticky AMP!!

উত্তরাংশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলার সম্ভাব্যতা যাচাই হবে

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির মূল এলাকার বাইরের উত্তরাংশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে (ওপেন পিট মাইনিং) কয়লা উত্তোলনের বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই তথ্য জানানো হয়।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উন্নয়নের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে গত ১৯ জুলাই পর্যন্ত উৎপাদন থেকে বিক্রয় ও ব্যবহার শেষে মজুতের পরিমাণ রেকর্ড ছিল ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৪ টন। কিন্তু কোল ইয়ার্ডে বাস্তব মজুত পাওয়া যায় ৩ হাজার টন। অর্থাৎ রেকর্ডের চেয়ে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন কম ছিল, যা মোট উৎপাদনের ১ দশমিক ৪২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বড়পুকুরিয়া খনির সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকা থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৩ দশমিক ২০৫ মিলিয়ন টন কয়লা তোলা যাবে। এরপর ওই এলাকা থেকে আর কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে না। বড়পুকুরিয়ার সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকাসংলগ্ন উত্তরাংশে ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হওয়ার বিষয়টি বর্তমান খনন ঠিকাদার এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম বিসিএমসিএলকে জানিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিসিএমসিএল কর্তৃক বড়পুকুরিয়ার উত্তরাংশের প্রায় ১ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় এবং দক্ষিণের ৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় একটি ফিজিবিলিটি সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে।

সমীক্ষা প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বড়পুকুরিয়া সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকাবহির্ভূত উত্তরাংশে দেড় কিলোমিটার এলাকায় ভূগর্ভস্থ রুম অ্যান্ড পিলার মাইনিং পদ্ধতি অবলম্বনে প্রায় ৯২ মিলিয়ন টন ভূতাত্ত্বিক মজুতরত কয়লার মধ্যে মাত্র ৩ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব। সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকার দক্ষিণাংশে আন্ডার গ্রাউন্ড লংওয়াল মাইনিং পদ্ধতি অবলম্বনে ভূতাত্ত্বিকভাবে মজুতরত ৬২ মিলিয়ন টন কয়লার মধ্যে প্রায় ১০ দশমিক ১৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে। এ ছাড়া বড়পুকুরিয়ার সেন্ট্রাল মাইনিং এলাকাবহির্ভূত উত্তরাংশে ওপেন পিট মাইনিং পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বৈঠকে বলা হয়েছে, বড়পুকুরিয়ায় ৩৯০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত আছে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ১০ মিলিয়ন টন কয়লা তোলা যাবে। আর উন্মুক্ত পদ্ধতিতে খনন করা হলে ২৩৬ মিলিয়ন টন কয়লা তোলা যাবে। কমিটি এ বিষয়ে কোনো মত দেয়নি। তবে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে যেতে হলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যগত প্রভাবের বিষয়টি দেখতে হবে।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে জানানো হয় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। বিদ্যমান চুক্তির আওতায় ২০২১ সাল পর্যন্ত এখান থেকে ৩ দশমিক ২০৫ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে। এরপর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উত্তর অংশে দেড় বর্গকিলোমিটার এবং দক্ষিণে ৩ বর্গকিলোমিটার মজুত এলাকা থেকে কয়লা উত্তোলনের মাধ্যমে চাহিদা পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বৈঠকে জানানো হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি সন্তোষজনক এবং এটি আগামী বছর থেকে উৎপাদনে যেতে পারবে।
কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য হুইপ মো. আতিউর রহমান আতিক ও এম এ লতিফ বৈঠকে অংশ নেন।