Thank you for trying Sticky AMP!!

উত্তরা পাসপোর্ট কার্যালয়ের সেবায় খুশি মানুষ

নিজস্ব ভবনে উত্তরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম ও সেবা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পাসপোর্ট নিতে আসা জনসাধারণ। নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরুর দুই মাস হবে আগামীকাল। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভাড়াবাড়ি ছেড়ে নতুন ভবনে এর কার্যক্রম শুরু হয়।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, কার্যালয়ে তেমন ভিড় নেই। নিচতলার তথ্যসেবাকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছেন দুজন। তথ্য প্রদানের সেবার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে নিয়মিত একজন কর্মকর্তার সঙ্গে রাখা হয়েছে আনসার সদস্য। আছে নোটিশ বোর্ডে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা। পাসপোর্ট ফরম কোথায় পাওয়া যায়, কীভাবে পূরণ করতে হয়, কোন ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া যায় এবং আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়। ন্যূনতম শিক্ষিত যে কেউ কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই করতে পারবেন সেসব কাজ।
ভবনটির প্রতি তলায় প্রতিটি বিভাগেই মানা হচ্ছে শৃঙ্খলা ও সারিবদ্ধতা। নেই কোনো ঠেলাঠেলি, হইহুল্লোড় কিংবা সারি ভেঙে সামনে যাওয়ার তাড়া। তৃতীয় তলায় পাসপোর্ট প্রদান অংশে গিয়ে দেখা যায় লোহার রেলিং তৈরি করা হয়েছে সেখানে। নারী-পুরুষের জন্য পৃথক সারি। চতুর্থ তলায় শৃঙ্খলার একই দৃশ্য। ছবি তোলার জন্য পৃথক দুটি লাইনে একজন করে ভেতরে যাচ্ছেন। আঙুলের ছাপ দিচ্ছেন আর ছবি তুলছেন।
মো. শরীফুজ্জামান মিয়া পাসপোর্টের ফরম জমা দিতে এসেছেন। সারির পেছনের অংশে তিনি ছিলেন। কার্যালয়ের সেবার মান নিয়ে তিনি বলেন, ‘শুনেছিলাম দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করা যায় না। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। পরিবেশ অনেক ভালো, জায়গাটাও বড়।’
সময়মতো এবং যথাযথ সেবা দেওয়ায় ফরম জমা, ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ নেওয়া, পাসপোর্ট প্রদান—সব শাখাতেই কাজ হচ্ছে মসৃণভাবে। কোনো ভিড়ভাট্টাও হচ্ছে না। অতিরিক্ত লম্বা লাইনও হচ্ছে না। ফলে ভোগান্তি ছাড়াই পাসপোর্ট করতে পারছেন গ্রহীতারা। দালালদের কোনো সুযোগই এখানে নেই।
পুরুষদের ছবি তোলা এবং আঙুলের ছাপ দেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সৈকত সরকার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো ঝামেলায় পড়ি নাই। ফরম পূরণ, ব্যাংকে টাকা জমা, সত্যায়িত করানো—সব নিজেই করেছি।’ এই শাখায় বেশি সময় লাগছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেশি না। একটু সময় লাগছেই। তবে অস্বাভাবিক নয়।’ রাজধানীর অন্য দুটি পাসপোর্ট কার্যালয়ের মতো উত্তরায় নেই এত জনসমাগম। তাই ভোগান্তি নেই বলেই জানালেন সেবা নিতে আসা অনেকেই।
তবে বাইরে দালাল চক্রের সদস্যদের বেশ সক্রিয় দেখা গেল। কার্যালয়ের বিপরীত অংশেই বাঁশ ও টিনের দোকানঘরে থাকেন তাঁরা। এসব দোকানে অবাধে মিলছে পাসপোর্টের ফরম। পূরণ করতেও সাহায্য করছেন তাঁদের অনেকেই। ফটোকপি থেকে শুরু করে অনলাইন মাধ্যমেও ফরম পূরণ করা যাচ্ছে সেখানে। এখানে আবদুল গনি নামের একজন বলছিলেন, ‘আমরা আসলে সাহায্য করি। কী ধরনের সাহায্য করেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাংকে টাকা জমা, কাগজপত্র প্রস্তুত, ফাইল তৈরি, এমনকি পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রেও সহায়তা করি। এসবের জন্য খুশি হয়ে গ্রাহক যেটুকু দেয় সেটিই আমাদের লাভ।’
নতুন ভবনে সেবা চালু হওয়ার পর নিরাপত্তার জন্য আর্চওয়ে বসানোয় মূল ফটকের পরিবর্তে পাশের দরজা ব্যবহার করা হচ্ছে। ভবনের শৌচাগারগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে না। কোনোটি আবার বন্ধ করে রাখা।
উত্তরা পাসপোর্ট কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক আজিজুর ইসলাম বলেন, ‘কার্যালয়ের ভেতরে দালালদের তৎপরতা বন্ধ করা হয়েছে। সব সময় নজর রাখি যেন কোনো ধরনের দুর্নীতি না হয়। আমাদের জনবলের অভাব রয়েছে। পুরো ভবন পরিষ্কারের জন্য একজন কর্মী আছেন। তবে গ্রাহকেরাও এখানে ভালো সেবা পাচ্ছেন।’