Thank you for trying Sticky AMP!!

একই লাইনে দুটি ট্রেন, অল্পের জন্য রক্ষা

রংপুরের বদরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের ১ নম্বর রেললাইনে গত মঙ্গলবার রাতে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। এর মধ্যে একই লাইনে একটি তেলবাহী ট্রেন ঢুকে পড়ে। গেটকিপার লাল পতাকা নিয়ে দৌড়ে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান। যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে তেলবাহী ট্রেনটি চালক থামাতে সক্ষম হন। এতে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান ট্রেনযাত্রীরা।
রেলওয়ে স্টেশন কার্যালয় ও ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গত মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের চিলমারী থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী রমনা ৪২১ নম্বর ট্রেনটি রাত নয়টার দিকে বদরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের ১ নম্বর লাইনে এসে থামে। স্টেশনের অনুমতি না পাওয়ায় সেখানেই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে ছিল। প্রায় আধা ঘণ্টা পর একই লাইনে তেলবাহী একটি ট্রেন ঢুকে পড়ে। এতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের যাত্রী ও স্টেশন চত্বরে উপস্থিত লোকজন আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। এ সময় লাল পতাকা হাতে নিয়ে স্টেশনের গেটকিপার মোকছেদুল ইসলাম দৌড়ে রেললাইনের ওপরে গিয়ে তেলবাহী ট্রেনটির সামনে গিয়ে দাঁড়ান। চালক শেখ আবুল হোসেন দ্রুত ট্রেনটিকে থামাতে সক্ষম হন। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যায় অসংখ্য ট্রেনযাত্রী। তখন দুই ট্রেনের মধ্যে দূরত্ব ছিল মাত্র ৫০-৬০ গজ। তবে এ সময় হুড়োহুড়ি করে ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে অন্তত ১০ যাত্রী আহত হন।
আহত ট্রেনযাত্রী ইদ্রিস আলী (৪৫) বলেন, ‘দুই ট্রেনের সংঘর্ষ হলে হয়তো বেঁচে থাকতাম না। এখন মনে হচ্ছে নতুন জীবন ফিরে পেলাম। একই লাইনে কীভাবে দুটি ট্রেন ঢুকল, সেটা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ অপর ট্রেনযাত্রী রোকেয়া বেগম (৩৫) বলেন, ‘ওই সময়ে আমাদের অবস্থা মুখে বলে বোঝানো যাবে না।’
তেলবাহী ট্রেনের চালক শেখ আবুল হোসেন বলেন, ‘সিগন্যাল ডাউন দেখে আমি ট্রেন নিয়ে সরাসরি স্টেশনের ১ নম্বর রেললাইনে ঢুকে পড়ি। এই ট্রেন বদরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়াত না। সরাসরি দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে থামত। কিন্তু অন্ধকারে দূর থেকে ট্রেনের আলোতে স্টেশনে অন্য একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে বুঝতে পেরে আমি দ্রুত ট্রেনটি থামিয়ে দিই। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে দুটি ট্রেন ও যাত্রীরা। এ জন্য দায়ী বদরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ।’
রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার (চুক্তিভিত্তিক) সফিউর রহমান বলেন, যাত্রীবাহী ট্রেনটি ঢোকার পর দায়িত্বে থাকা লোকজন আউটার সিগন্যাল ওপরে তুলে দেন। কিন্তু সিগন্যালের সঙ্গে জড়িয়ে পেঁচিয়ে থাকা তার হয়তো সিগন্যাল ওপরে ওঠাতে কাজ করেনি। স্টেশনের বাঁকা লাইনের কারণেও তা দেখা যায়নি। এ কারণেই সমস্যা হয়েছে। এ ছাড়া তেলবাহী ট্রেনটি শ্যামপুর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রমের সময় কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার বিধি অনুযায়ী তা আমাদের জানানোর কথা থাকলেও তিনি তা জানাননি। তবে শ্যামপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার শংকর বাবু বলেন, ট্রেনটি শ্যামপুর স্টেশন ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গেই বিধি অনুযায়ী স্টেশনের ব্লক যন্ত্রের মাধ্যমে তা বদরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের ব্লক যন্ত্রে বাজানো হয়।