Thank you for trying Sticky AMP!!

এসি, কমোডও এডিস মশার অন্যতম আবাসস্থল

ফাইল ছবি।

কিশোরগঞ্জে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গতকাল সোমবার বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৩৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। ঢাকা ও শহর এলাকা থেকে ঘরে ফেরা লোকজনের কারণে আসন্ন ঈদুল আজহায় রোগী আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এডিস মশার বিস্তার রোধে আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা ছাড়াও এসি ও হাইকমোড আছে—এমন ভবনে বাড়তি সতর্কতা নিতে বলা হয়েছে। এগুলো এডিস মশার অন্যতম আবাসস্থল উল্লেখ করে এসির পানি যেন জমে না থাকে এবং কমোডে দিনে কয়েকবার গরম পানি ঢালার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ঈদকে সামনে রেখে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় নির্ধারণে গতকাল ২৫০ শয্যা সদর জেনারেল হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

কর্মশালায় কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. হাবিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার সদর জেনারেল হাসপাতালসহ অন্য হাসপাতালগুলোয় নতুন করে আরও ৩৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ৩১২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য এ পর্যন্ত মোট ১৭ জন গুরুতর রোগীকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। আর স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১০ থেকে ১২ জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে গতকাল ২০ জন নতুন রোগী ভর্তিসহ শিশু-নারী-পুরুষ মিলিয়ে ৪৪ জন চিকিৎসাধীন।

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এবং স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় পুরো জেলায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা প্রতিদিন অসংখ্য রোগী নিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালে শুধু ডেঙ্গু রোগীদের জন্য তিনটি আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হলেও স্থান সংকুলান হচ্ছে না। ঈদের আগে-পরে আরও বাড়তি রোগীর আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন কর্তৃপক্ষ। রোগীর বাড়তি চাপ সামলাতে শহরের ডায়াবেটিক হাসপাতাল ও শহরতলির শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ডের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় কর্মশালায়।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) জেলা শাখার সভাপতি ডা. মাহবুব ইকবাল। এতে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাজমুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, অধ্যক্ষ সজল কুমার সাহা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) জেলা শাখার সভাপতি ডা. দ্বীন মোহাম্মদ, সিভিল সার্জন মো. হাবিবুর রহমান, ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সুলতানা রাজিয়া, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক রওশন আক্তার, জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক এম এ ওয়াহাব বাদল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ডেঙ্গু বিষয়ে অবহিতকরণ ও এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে করণীয় নির্ধারণবিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট মুহাম্মদ আতাউর রহমান।

মেডিসিন কনসালট্যান্ট মুহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, শুধু ময়লা-আবর্জনা আর বাইরের জমানো পানিতে এডিস মশার বিস্তার ঘটে মনে করে অনেকে আতঙ্কে ঘর থেকে বাইরে বের হতে চান না। গত কয়েক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা মোটামুটি সচ্ছল পরিবারের ছিলেন। তাঁদের অনেকের বাড়িতে এসি ও হাইকমোড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর এগুলোও এডিস মশার অন্যতম আবাসস্থল। কাজেই সবাইকে এসির পানি যাতে জমে না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাইকমোডের পানিতে দিনে অন্তত কয়েকবার গরম পানি ঢেলে দিতে হবে।