Thank you for trying Sticky AMP!!

ঐতিহ্য রক্ষায় ঘোড়দৌড়

মাদ্রাসামাঠে গতকাল বিকেলে ঘোড়ার গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা। ছবি: প্রথম আলো

একসময় রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী যানবাহন ছিল ঘোড়ার গাড়ি। আধুনিক যানবাহনের চাপে রাজশাহীর এই ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার পথে। এই ঐতিহ্যের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য নগরে ঘোড়ার গাড়ির ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। আর অবশিষ্ট কয়েকটি ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে গত বছর থেকে পয়লা বৈশাখে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোড়ার গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিযোগী কমতে কমতে এবার এর সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র তিনে।

এবারও বর্ষবরণের নানা আয়োজনের মধ্যে গত রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে তিনটি ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে রাজশাহীর মাদ্রাসামাঠে ঘোড়ার গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার ছিল তিনটি। গাড়ির সংখ্যা তিনটি হওয়ার কারণে তিন প্রতিযোগীই পুরস্কার পেয়েছেন।

প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছেন জেলার পবা উপজেলার নওহাটা এলাকার তজিবর মিয়া, দ্বিতীয় হন পবার হরিপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুস সাত্তার, তৃতীয় হন নগরের বহরমপুর এলাকার আবদুল খালেক।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর কবীর এই প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর কবির বলেন, ‘একসময় এ শহরটির প্রধান বাহন ছিল ঘোড়ার গাড়ি বা টমটম। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেছে। হারানো ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।’

এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এসে নওহাটা এলাকার টমটমচালক তজিবর মিয়া বলেন, আগের দিনে টমটম চালিয়ে নিজের সংসার এবং ঘোড়ার খাবারের খরচ চলত। এখন সংসারের খরচ ওঠা তো দূরে থাক, ঘোড়ার খাবারই জোগাড় করা যায় না। এরপরও পয়লা বৈশাখের এ আয়োজনে তাঁরা খুশি।

এই প্রতিযোগিতা দেখতে এসেছিলেন রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী মধ্যম মহন্ত। তিনি বলেন, এই প্রতিযোগিতা দেখে রাজশাহীর হারানোর ঐতিহ্যের কথা মনে পড়ছে। তাঁর দাবি, বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি এই তিন টমটমের মালিককে একটু পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া যেত, তাহলে হয়তো তাঁরা টিকে থাকতে পারতেন।

বর্তমানে রাজশাহী অঞ্চলে বলতে গেলে হারিয়ে যেতে বসেছে এ ঐতিহ্য। সে ঐতিহ্য ধরে রাখতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাইপাস মোড়ে টমটমের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঐতিহ্য চত্বর’।