Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনাকালে ডেঙ্গু রোধে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেই তৈরি হয়েছে ডেঙ্গুর আশঙ্কা। তাই এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে ‘ডেঙ্গু রোধে কিশোরগঞ্জ’ নামে একটি সংগঠন পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায়। আজ বৃহস্পতিবার জেলা শহরের হারুয়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যেই ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার বংশবিস্তারের প্রকোপ দেখা দিয়েছে জেলায়। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘ডেঙ্গু রোধে কিশোরগঞ্জ’ নামে একটি স্বেচ্ছাশ্রমভিত্তিক সমন্বিত সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ডেঙ্গু রোধের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বৃষ্টিস্নাত সকালে ১২০ জন কিশোর-তরুণের অংশগ্রহণে কিশোরগঞ্জে স্বেচ্ছাশ্রমে এডিস মশক নিধন কর্মসূচির কাজ শুরু হয়। স্বেচ্ছাসেবকদের সবাই ছাত্র। কেউ স্কুলে, কেউ কলেজে এবং কেউ আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক, বৃষ্টিতে রেইনকোট ও পায়ে বুট লাগিয়ে নেমে যান এডিসের আবাসস্থল পরিষ্কার করতে।

আজ সকালে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। একদল যখন এই কাজ করছেন, তখন আরেক দল বাসায় গিয়ে এডিস ও ডেঙ্গু সম্পর্কে জনগণকে ব্রিফিং দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে বাসায় বাসায় লিফলেট বিতরণ করছেন। সেই সচিত্র লিফলেটে লেখা—ডেঙ্গু কীভাবে হয়, এর লক্ষ্মণ কী, কীভাবে এডিস মশার বিস্তার রোধ করতে হবে ইত্যাদি।

উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা এবার মূলত ডেঙ্গুবিরোধী অভিযান চালাচ্ছেন। মশার কামড়ে অতিষ্ঠ শহরের মানুষেরা অন্যান্য মশার বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করবেন। শহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা নিয়ে তাঁদের চিন্তা রয়েছে। তবে করোনার সময়ে ডেঙ্গু হলে চিকিৎসার অভাবে সেটি ভয়াবহ একটি ব্যাপার হবে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথমে ডেঙ্গু নিয়েই তাঁরা কাজ করছেন।

‘ডেঙ্গু রোধে কিশোরগঞ্জ’-এর সমন্বয়ক মো. শহীদুল হক ও ডেঙ্গু রোধ কার্যক্রমের উদ্যোক্তা লুৎফুল্লাহ হুসাইন এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাঁরা বলেন, কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকায় এডিস মশার জন্মস্থল বিনাশ ও গণসচেতনতা তৈরির জন্য ২৫ হাজার লিফলেট বিতরণ করাসহ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ছয়টি ফগার মেশিনের মাধ্যমে ওষুধ ছিটিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ৮০-৯০ জন স্বেচ্ছাসেবী এই কর্মসূচিতে কাজ করবেন।

এক দিন পরপর সামাজিক এ ব্যতিক্রমী কাজে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া কিশোরগঞ্জের ছাত্ররা ছাড়াও স্থানীয় স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাসহ সব সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া সংগঠন ও নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত ব্যক্তিগত অংশগ্রহণ থাকছে। মোট ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক এতে কাজ করবেন। এ লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ডেঙ্গু রোধ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।

কিশোর-তরুণদের সামাজিক এই কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেবেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল ইসলাম। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মশা নিয়ন্ত্রণ ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন।