Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনাকালে মাতৃস্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হওয়া নিয়ে উদ্বেগ  

নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উপলক্ষে শুক্রবার ‘নিরাপদ গর্ভপাত সেবা পাওয়া নারীর অধিকার’ শিরোনামে ভার্চ্যুয়াল মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বেসরকারি সংগঠন নারীপক্ষ

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নিরাপদ গর্ভপাত, প্রসব–পূর্ব ও পরবর্তী সেবা ‘ব্যাপক হারে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে’ জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একটি আলোচনা সভার বক্তারা।

নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উপলক্ষে শুক্রবার বেসরকারি সংগঠন নারীপক্ষ আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, করোনাকালে জরুরি এসব সেবা ব্যাহত হয়ে মাতৃস্বাস্থ্যে ঝুঁকি তৈরি করেছে। ‘নিরাপদ গর্ভপাত সেবা পাওয়া নারীর অধিকার’ শিরোনামের এই সভায় দেশের নারীবাদী ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নিরাপদ গর্ভপাতবিষয়ক ইংরেজি প্রকাশনা বাংলায় উপস্থাপন করা হয়।

এসব আলোচনায় উঠে আসে, সমাজের নেতিবাচক মনোভাব ও অসচেতনতা অনিরাপদ গর্ভপাতের ঝুঁকি তৈরি করছে। ফলে গর্ভপাতের জন্য যত্রতত্র ওষুধের দোকান থেকে ইচ্ছামতো ওষুধ কিনে ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যায়। আবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গর্ভপাতের জন্য স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে না আসা এবং সেবাদানকারী ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থার অভাবে ২৭ শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা নারী সেবা না পেয়ে ফিরে যান।

মূল আলোচক হিসেবে অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রিভেনশন অব সেপটিক অ্যাবরশন, বাংলাদেশের (বাপসা) নির্বাহী পরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, সমাজে হেয় হওয়ার ভয়ে অনেক নারী শুধু স্বামী ছাড়া গর্ভপাতের বিষয়টি নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না। অপরিকল্পিত গর্ভধারণে নারীরা যে ভোগান্তির শিকার হন, তা বিবেচনা না করে দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে অনেকে গর্ভপাত করা নারীদের ঘৃণা করতে থাকেন।

আরেক আলোচক আইপাস বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা (স্বাস্থ্য প্রক্রিয়া শক্তিশালীকরণ ও প্রশিক্ষণ) শারমিন সুলতানা বলেন, গর্ভধারণের ১০ সপ্তাহের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী এবং ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসকের কাছে নিরাপদ গর্ভপাত করার সরকারি নির্দেশ রয়েছে। অনেক মা এই সময় পার করে গর্ভপাত করতে আসেন। আবার অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসক নেই। ফলে ২৭ শতাংশ মা গর্ভপাত করাতে এসে সেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান।

নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন হকের মতে, নিরাপদ গর্ভপাতসহ নিরাপদ মাতৃত্বের বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বেসরকারি সংগঠনগুলো এক হয়ে বিভিন্ন দাবি তুলতে পারে।

আয়োজক সংগঠনের আরেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ফজিলা বানু বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রতি নারীর নিজের উদাসীনতা ও পরিবারের অবহেলা থাকে। করোনাকালে প্রসূতি নারীর স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়নি। অনেক প্রসূতি সেবা নিতে হাসপাতালে আসেননি, অনেকে সেবা নিতে এসে দুর্ভোগে পড়েছেন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক মঞ্জুর কাদের আহমেদ বলেন, নিরাপদ গর্ভপাতের যাতে প্রয়োজন না হয়, সে লক্ষ্যে জোর দেওয়া উচিত পরিকল্পিত গর্ভধারণের ওপর। কারণ, বারবার গর্ভপাতে নারী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন।

সভায় রি–প্রোডাকটিভ হেলথ সার্ভিসেস ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রামের (আরএইচস্টেপ) উপপরিচালক (কর্মসূচি) এলভিনা মুশতারী, মেরি স্টোপস বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মাসিক নিয়মিতকরণ বা গর্ভপাতবিষয়ক প্রচার) তাজনুভা রহমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সভাটি সঞ্চালনা করেন নারীপক্ষের প্রকল্প পরিচালক (নিরাপদ গর্ভপাতের অধিকার দাবি: এশিয়ায় কৌশলগত অংশীদারত্ব) সামিয়া আফরীন।