Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনায় অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে হাসিমুখ

`বঞ্চিত তোর স্নিগ্ধ হাসি, হৃদয় মাঝে বাজায় বাঁশি` এ স্লোগান নিয়ে ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ যাত্রা শুরু করা হাসিমুখ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অসহায় দুস্থদের সহযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসচেতনতা মূলক কাজ করে আসছে। ছবি: লেখক

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় আজ সকলে যখন ঘরবন্দী। তখন সমাজের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কাছে করোনা নয়, ক্ষুধাই সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম।

এই অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কর্তৃক পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'হাসিমুখ' গত ৩০ মার্চ "করোনা সংকট মোকাবেলায় অসহায় মানুষদের পাশে হাসিমুখ"- এই নামে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খোলে। এরপর থেকেই নিজ নিজ ঘরে বসে কাজে লেগে যায় হাসিমুখের সদস্যবৃন্দ। এ সকল কাজের মধ্যে আছে- নিয়মিত ইভেন্ট পেজে আপডেট দেয়া, টাকা পাঠানো ব্যক্তিদের মোবাইলে কনফার্মেশন মেসেজ পাঠানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা, ফেসবুক, মাইডে ও বিভিন্ন গ্রুপে নিয়মিত ইভেন্ট লিঙ্ক শেয়ারের মাধ্যমে মানুষকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান করা প্রভৃতি। কাজের স্বচ্ছতার জন্য প্রতিদিন রাতে সেদিন যারা টাকা পাঠিয়েছেন, তাদের নাম্বারের শেষ ৬ ডিজিট ও টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে লিস্ট বানিয়ে আপলোড করা হয়েছে। পেজটিকে সচল রাখার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতার জন্য সদস্য কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে নানা সৃজনশীল কাজকর্ম যেমন করোনা ভাইরাস বিষয়ক ভিডিও বানানো, ছবি এঁকে কার্টুন সিরিজ তৈরি করে করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা প্রভৃতি।

মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভালোবাসায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে থাকে অনুদান। এক্ষেত্রে বরাবরের মতোই পাশে ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরা। "বাড়িয়ে দেই সহযোগিতা, জাগ্রত করি মানবতা" এ স্লোগানকে সামনে রেখে পরিচালিত হয় ত্রাণ কার্যক্রম। সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় গত ৫ এপ্রিল প্রথম ধাপে ঢাকা জেলার ডেমরা থানার বড়ভাঙ্গা এলাকায় ৫৫ টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এরপর ৭ এপ্রিল দ্বিতীয় ধাপে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ চাঁদখানা এলাকায় ২৫ টি পরিবারের কাছে এবং পঞ্চগড় সদরের মাগুরা ইউনিয়নের আয়মা ঝলই গ্রামে ২০ টি পরিবারের নিকট ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তৃতীয় ধাপে কুষ্টিয়ার জগতি গ্রামে ১৫ টি পরিবারের নিকট ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়।

অসহায় মানুষদের কাছে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল, লবণ, চিড়া ও সাবান বিতরণ করা হয়। ছবি: লেখক

চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল, লবণ, চিড়া ও সাবান বিতরণ করা হয়। হাসিমুখের প্রতিনিধিরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় নিজ নিজ এলাকায় এ ত্রাণ পরিচালনা করে।

ত্রাণ বিতরণের পূর্বে, হাসিমুখ সংগঠনটি এ বছর তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা জেলার ডেমরা এলাকায় প্রায় ১০০ জন দরিদ্র মানুষকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা ও মানবসেবায় নিয়োজিত থাকার প্রয়াস ব্যক্ত করেছে হাসিমুখ পরিবার।

"বঞ্চিত তোর স্নিগ্ধ হাসি, হৃদয় মাঝে বাজায় বাঁশি" এ স্লোগান নিয়ে ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ যাত্রা শুরু করে এ হাসিমুখ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অসহায় দুস্থদের সহযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসচেতনতা মূলক কাজ করে আসছে সংগঠনটি।
*লেখক: শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।