Thank you for trying Sticky AMP!!

কুমিরের মুখ থেকে কিশোরের ফেরা

হাসপাতালের বিছানায় কিশোর রাকিব শেখ। কুমিরের মুখ থেকে বেঁচে ফিরে সে। ছবি: প্রথম আলো

গোসল করতে দিঘিতে নেমেছিল এক কিশোর। ঘাটের সিঁড়িতে ডুব দিতেই পায়ে কামড় বসায় একটি কুমির। টেনে নিয়ে যায় পানির গভীরে। সেখান থেকে কোনোমতে বেঁচে ফিরল কিশোরটি।

গতকাল সোমবার দুপুরে বাগেরহাটের হজরত খানজাহান আলী (রহ.)–এর মাজারের দিঘিতে এ ঘটনা ঘটে। ওই কিশোরের নাম মো. রাকিব শেখ (১৫)। মাজারসংলগ্ন রণবিজয়পুর গ্রামের জাকিরের ছেলে রাকিব স্থানীয় কে আলী দরগা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

রাকিব বলে, ‘দুপুরে বেশ রোদ ছিল, গরম লাগছিল। তাই মাজারের দিঘির প্রধান ঘাটের সিঁড়িতে গোসল করতে নামি। হাত-পা, শরীরে পানি দিচ্ছিলাম। একটা ডুবও দিই। দ্বিতীয় ডুব দিতেই একটি কুমির আমার ডান পা কামড়ে ধরে নিচের দিকে টানতে থাকে। জীবন বাঁচাতে আমি কুমিরের চোখ, নাক ও মাথায় এলোপাতাড়ি ঘুষি মারতে শুরু করি। একপর্যায়ে কুমিরটি পা ছেড়ে দিলে আমি সাঁতরে ওপরে উঠি।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তখন রাকিবের ওই পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তাকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাসপাতালের চিকিৎসক ফারহান আতিক বলেন, কুমিরের আক্রমণে আহত ওই কিশোরকে গতকাল দুপুরের পর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার ডান পায়ের ঊরু থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ক্ষত হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সে পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত।

ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদসহ তৎকালীন খলিফাতাবাদ নগরের প্রতিষ্ঠাতা হজরত খানজাহান আলী (রহ.)। তাঁর মাজার প্রাঙ্গণের বিশাল দিঘির অন্যতম ঐতিহ্য কুমির। মাজারের খাদেমরা বলেন, হজরত খানজাহান (রহ.) তাঁর জীবদ্দশায় এই দিঘিতে ‘কালাপাহাড়’ ও ‘ধলাপাহাড়’ নামে দুটি কুমির পালন করতেন। সেই থেকে এখানকার সব পুরুষ কুমির কালাপাহাড় আর নারী কুমির ধলাপাহাড় নামে পরিচিত। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই জুটির শেষ বংশধরটি মারা গেছে। বর্তমানে দিঘিতে কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড়ের কোনো বংশধর নেই।

অবশ্য দিঘির সেই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে কুমিরের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ২০০৫ সালে ভারত সরকারের উপহার দেওয়া ৪০টি কুমিরছানার মধ্যে ৬টি এ দিঘিতে ছাড়া হয়।