Thank you for trying Sticky AMP!!

কোনো কাজে আসছে না তিন কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে। সংযোগ সড়ক নেই। চলাচলের পথটা তাই সেতুর নিচ দিয়ে। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের নাগরপুর এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে নোয়াই নদে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে দেড় বছর আগে। কিন্তু সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাটসহ সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে এ সেতু কোনো কাজেই আসছে না এলাকাবাসীর। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নদের দুই পারের কয়েকটি গ্রামের মানুষ।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাগরপুর সদর ইউনিয়নের আলোকদিয়া, পাইশানা, পানান, সেহরাইল, লক্ষ্মীদিয়া, চরপানান, নাগদা, ভালকুটিয়া, তীরছাসহ আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রামে হাজারো মানুষের বসবাস। উপজেলা সদরে যাতায়াতের সুবিধার জন্য তাদের দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কের ভালকুটিয়া থেকে একটি পাকা রাস্তা ও নোয়াই নদের ওপর একটি সেতু নির্মাণের। এলাকার মানুষের দাবির মুখে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ২ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৩ টাকা ব্যয়ে ভালকুটিয়ায় নোয়াই নদের ওপর ৭২ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মেসার্স দাস ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সালে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করে। সেতু নির্মাণের পর এর দুই পাশে ২০০ মিটার করে মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। ফলে সেতুর নিচ দিয়েই চলাচল করছে এলাকাবাসী।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, এত বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়ে সেতু নির্মাণ করা হলেও তা তাঁদের কোনো কাজে আসছে না। শুষ্ক মৌসুমে সেতুর নিচ দিয়ে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পানি থাকে। তখন নৌকাযোগে পারাপার হয় সেতুর দুই পারের মানুষ।

সরেজমিনে নোয়াই নদের পারে ওই সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লোকজন সেতুর নিচ দিয়ে যাতায়াত করছেন। তাঁদের একজন আলোকদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শারমিন সুলতানা বলেন, বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। সেতু থাকলেও নৌকায় পারাপার হতে হয়। একই গ্রামের আয়নাল হক বলেন, সেতুর দুই প্রান্তে মাটি ভরাট করে দিলেই মানুষের দুর্ভোগ শেষ হয়। ভালকুটিয়া গ্রামের শরিফ আহমেদ বলেন, তিন কোটি টাকার সেতু দাঁড়িয়ে আছে, অথচ মানুষ সেতু ব্যবহার করতে পারছে না। অবিলম্বে এটি ব্যবহারের উপযোগী করার ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলম হোসেন বলেন, এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি ছিল সেতু। সেই সেতু নির্মিত হলেও এর কোনো সুফল জনগণ পাচ্ছে না।

নাগরপুর উপজেলা প্রকৌশলী শাহীনুর আলম বলেন, সেতুর দুই প্রান্তে এবং টাঙ্গাইল-আরিচা সড়কের মোড় থেকে ওই সেতু পর্যন্ত একটি রাস্তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।