Thank you for trying Sticky AMP!!

কোয়ারেন্টিনের সময় ম্যানেজমেন্ট কীভাবে

দীর্ঘদিন ধরেই দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নিলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা সম্ভব হচ্ছে না কখনো শিক্ষার্থী আবার কখনো শিক্ষকদের অপারগতায়। অনেক শিক্ষার্থীই এই সময়টা শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যয় করছেন।

বর্তমান সময়ে নিজেকে করপোরেট দুনিয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই উচিত দক্ষতা উন্নয়ন (স্কিল ডেভেলপমেন্ট) নিয়ে কাজ করা। অন্য সময়ে ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, পরীক্ষার জন্য এসব নিয়ে কাজ করার তেমন সুযোগই পাওয়া যায় না। তাই এই কোয়ারেন্টিনই হতে পারে স্কিল ডেভেলপমেন্টর মোক্ষম সুযোগ। বিভিন্ন প্রোডাক্টিভ কাজের মাধ্যমে করা যেতে পারে এই স্কিল ডেভেলপমেন্ট তথা সেলফ ডেভেলপমেন্ট।

অনলাইন কোর্স
বর্তমানে অনলাইনে ফ্রি কোর্সগুলো খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কোর্সেরা, ইউডেমি, হার্ভার্ড, বিওয়াইএলসি এবং আরও অনেক প্রতিষ্ঠান থেকেই এসব অনলাইন কোর্সের ব্যবস্থা করা হয়। এখানে একজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ের মৌলিক ধারণা অর্জন করতে পারেন। যেমন সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, সিভি রাইটিং, ই-মেইল রাইটিং, ফটোগ্রাফি, এংগার ম্যানেজমেন্ট, প্রেজেন্টেশন স্কিল, ম্যাশিন লার্নিং, কম্পিউটার লার্নিংসহ আরও অনেক কিছু। এসব অনলাইন কোর্স একজন শিক্ষার্থীকে ওই বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই কোর্সগুলো করলে সার্টিফিকেটও ইস্যু করা হয়, যা আপনি যোগ করতে পারেন আপনার লিংকডিন প্রোফাইলেও।

কম্পিউটার লার্নিং
বর্তমান সময়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বাধ্যতামূলক কম্পিউটার জানা উচিত। তা না হলে এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকাই হবে দায়। তাই এই কোয়ারেন্টিনে ঘরে বসেই কম্পিউটারের বিভিন্ন কাজ আয়ত্তে নিয়ে আসার সুযোগটা কাজে লাগানো উচিত। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট, এক্সেস অর্থাৎ মাইক্রোসফট অফিসের কাজগুলো শিখে রাখা অতি জরুরি। এ কাজে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে ইউটিউবের শিক্ষামূলক ভিডিও এবং বিভিন্ন অনলাইন কোর্সের। এ ছাড়া কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, ইলাস্ট্রেশনের মতো কাজগুলো শিখে রাখলেও উপকার পাওয়া যায়।

প্রতীকী ছবি

ভাষা শিক্ষা
এই কোয়ারেন্টিনে শিক্ষার্থীরা খুব ভালো সুযোগ পাচ্ছেন মাতৃভাষার বাইরেও অন্য ভাষা শেখার। ইংরেজি ভাষা ছাড়া বর্তমান বিশ্বে আমরা প্রায় অচল। অনেক শিক্ষার্থীই ইংরেজিতে এখনো দুর্বল। তাঁরা এই দুর্বলতা নিয়ে কাজ করতে পারেন। এ ছাড়া কেউ চাইলে অন্য কোনো ভাষাও শিখে রাখতে পারেন। কোনো শিক্ষাই বিফলে যায় না। ভাষা শেখার জন্যও সাহায্য নেওয়া যেতে পারে অনলাইন কোর্স বা ইউটিউবের।

বিতর্ক
বিতর্ক সব সময়ই দারুণ নিজেকে ডেভেলপ করার জন্য। আর এই কোয়ারেন্টিনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন বিতর্ক। বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে খুব সহজেই অনলাইনে বিতর্ক করা যায়। এই সুযোগ শিক্ষার্থীদের অবশ্যই কাজে লাগানো উচিত।

স্পিকিং
পাবলিক স্পিকিং, প্রেজেন্টেশন নিয়ে শিক্ষার্থীদের সব সময়ই একটা ভীতি কাজ করে। এই ভীতি দূর করার এখনই সময়। নিজে নিজে চেষ্টা করেই ধীরে ধীরে পারদর্শী হওয়া সম্ভব এসব স্কিলে। অনলাইনে নিয়মিতভাবেই বিভিন্ন পাবলিক স্পিকিং, বিজনেস কেস কমপিটিশনের আয়োজন করা হয়। এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে পার্সোনাল ডেভেলপমেন্টের যথেষ্ট সুযোগ পান শিক্ষার্থীরা।

এ ছাড়া শরীরচর্চা, রান্না করা, বই পড়া, ছবি আঁকা, লেখালেখি, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন—এসবও নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্টের অংশ হতে পারে। অন্যান্য সময় নিজের জন্য সময় খুঁজে বের করতেই শিক্ষার্থীরা হিমশিম খান। কোয়ারেন্টিনে শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় না দিয়ে নিজেকে নিয়ে কাজ করার যে সুযোগ, তা লুফে নেওয়া উচিত আমাদের সবার। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এখনই সেলফ ডেভেলপমেন্টের দিকে নজর দেওয়া উচিত। তবেই হবে একটি প্রোডাক্টিভ কোয়ারেন্টিন।

*শিক্ষার্থী: বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়।