Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্যাসিনো-কাণ্ডে গণপূর্তের প্রকৌশলীসহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ

ঠিকাদারি কাজে অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার সকাল থেকে দিনভর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের একটি দল।

দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তাঁরা হলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল ইসলাম, পদ্মা অ্যাসোসিয়েটস ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ঠিকাদার মিনারুল চাকলাদার ও কক্সবাজারের চকরিয়ার সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম।

এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর তাঁদের তলব করে নোটিশ পাঠায় দুদক।

নোটিশে বলা হয়, ‘ঠিকাদার জি কে শামীমসহ (গোলাম কিবরিয়া শামীম) অন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের শত শত কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, ক্যাসিনো ব্যবসা করে শত শত কোটি টাকা অবৈধ প্রক্রিয়ায় অর্জন করে বিদেশে পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন‌্য আপনার অধীন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য রেকর্ড করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।’

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হলে প্রথম দিনই রাজধানীর ইয়াংমেনস ফকিরাপুল ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক (পরে বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন অভিযানে একে একে গ্রেপ্তার হন কথিত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম, মোহামেডান ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ মো. লোকমান হোসেন ভূইয়া, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সম্রাটের সহযোগী এনামুল হক আরমান, কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুল আলম (ফিরোজ), অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান (মিজান) ও তারেকুজ্জামান রাজীব।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিপুল অর্থের মালিক হওয়া, অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগ ওঠে। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের অপকর্মে সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাংসদ, রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্নজনের নাম উঠে আসে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তের পাশাপাশি তাঁদের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নামে দুদক।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িতদের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। পরে আরও দুজনকে দলে যুক্ত করা হয়। দলের অন্য সদস্যরা হলেন উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, আতাউর রহমান ও মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী।

অনুসন্ধান দলের সদস্যরা গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন ব্যক্তির নাম যাচাই-বাছাই করে একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করে। সংস্থার গোয়েন্দা শাখার পক্ষ থেকে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। পাশাপাশি র‍্যাব ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানেরা দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেন। সেসব তথ্য ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ইতিমধ্যে ১৯টি মামলা করেছে দুদক দল।