Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্যাসিনো-কাণ্ডে সম্পদের হদিস পেতে ২৪ সংস্থাকে সিআইডির চিঠি

ক্যাসিনো । প্রতীকী ছবি

ক্যাসিনো–কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, সেলিম প্রধানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে তথ্য পেতে ২৪ সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে এসব চিঠি দেওয়া শুরু হয়েছে। ছয়জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মানি লন্ডারিং আইনের আটটি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি।

যেসব সংস্থাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি লিমিটেড ও আবাসন খাতে ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব উল্লেখযোগ্য বলে জানা গেছে।

যে ছয়জনের তথ্য চেয়েছে, তাঁরা হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, যুবলীগের নেতা ও প্রভাবশালী ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীম, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক ও তাঁর ছোট ভাই একই থানার
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়া, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান ওরফে মিজান।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. মুস্তাফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, এসব সংস্থার তথ্য পাওয়ার পর বোঝা যাবে তাঁদের কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে র‌্যাব ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে। ওই দিন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার এবং তাঁর পরিচালিত ফকিরেরপুল ইয়ংমেনস ক্লাব থেকে ক্যাসিনোর সামগ্রী ও ২৯ লাখের বেশি টাকা জব্দ করে র‌্যাব। ওই ঘটনায় গুলশান থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করা হয়। পরে যুবলীগের নেতা ও প্রভাবশালী ঠিকাদার জি কে শামীমের গুলশানের নিকেতনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ওই ঘটনায় গুলশান থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হয়। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক ও তাঁর ভাই একই থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়ার পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসা থেকে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা উদ্ধার করলেও তাঁদের ধরতে পারেনি র‌্যাব। গেন্ডারিয়া থানায় মানি লন্ডারিং আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়।

৭ অক্টোবর ঢাকায় হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে থাই এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজ থেকে র‌্যাব অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সেলিম ভূঁইয়া ওরফে সেলিম প্রধানকে নামিয়ে আনে। তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হয়। সর্বশেষ ১১ অক্টোবর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানকে গ্রেপ্তার করা হয় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের তাঁর এক আত্মীয়র বাসা থেকে।

>

যুবলীগ নেতা খালেদ, জি কে শামীমসহ ছয়জনের সম্পর্কে তথ্য চেয়েছে সিআইডি
ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে আট মামলা
চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদে বিদেশে অর্থ পাচারের তথ্য মিলেছে
দুজন রিমান্ডে, দুজন কারাগারে, বাকি দুজন পলাতক

ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজান জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, তাঁর বৈধ আয়ের কোনো উৎস নেই। ঢাকায় তাঁর তিনটি বাড়ি, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তিনি আরও তিনটি বাড়ি কিনেছেন। নির্মাণাধীন ভবনের চাঁদাবাজি ও দখল করা মার্কেট থেকে চাঁদাবাজি ও মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পের মাদক ব্যবসার টাকা দিয়ে তিনি এসব সম্পদ গড়েছেন।

সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে খালেদ মাহমুদ জানিয়েছেন, তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিতেন। এ জন্য তিনি পদে পদে অনেক টাকা দিয়েছেন। তিনি সিঙ্গাপুরসহ একাধিক দেশে অর্থ পাচার করেন বলে স্বীকার করেছেন।

তদন্ত তদারকে যুক্ত সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কাজ বাগিয়ে নিতে খালেদ ক্ষমতাসীন দল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পদস্থ কর্মকর্তাদের যাঁদের টাকা দিয়েছেন, তাঁদের নাম বলেছেন।

মামলার তদন্তে সম্পৃক্ত একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এর আগে ১২টি সংস্থা জি কে শামীমের বিষয়ে দুই বস্তাভর্তি শত শত পৃষ্ঠা এবং আটটি সংস্থা থেকে খালেদের বিষয়ে নথিপত্র এসেছে। ২৪টি সংস্থা থেকে পাঠানো নথির সঙ্গে রিমান্ডে পাওয়া তথ্য মেলানো হবে।

জানতে চাইলে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ইমতিয়াজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সব তথ্য যাচাই–বাছাইয়ের পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে।