Thank you for trying Sticky AMP!!

‘ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করতে সরকার ও বিরোধী দলের চমৎকার মতৈক্য’

সেমিনারে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেছেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দলগুলোর কোনো মতপার্থক্য নেই। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে কীভাবে বঞ্চিত করা যায়, বৈচিত্র্যকে কীভাবে অস্বীকার করা যায়—এ প্রশ্নে তাদের চমৎকার ঐকমত্য।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্তকরণ বিষয়ে এক সেমিনারে মেসবাহ কামাল এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে ইসলামিক রিলিফ ও আইপিডিএস সেমিনারটির আয়োজন করে।

মেসবাহ কামাল আরও বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য আজ পর্যন্ত তাঁরা নিরন্তর লড়াই করে যাচ্ছেন। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এটা ছাড়া কিছু হবে না।

এ সময় সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর নাগরিকদের মূল স্রোতে অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো নীতিমালা করলে সেটা বাস্তবায়ন হবে না। এ কারণে বহুদিন থেকেই সংবিধানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় সুযোগটা এলেও সেটা করা যায়নি।’

সভায় দুটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আইপিডিএসের প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব দ্রং এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শুচিতা শরমিন

মেনন বলেন, এসডিজিতে বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে দাবি করলে এই দাবিটিও প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যে এখানকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীও এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তারা পিছিয়ে নেই।

আলোচনা সভায় প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, সেচের পানি না পেয়ে সম্প্রতি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর দুই কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অবস্থা বোঝানোর জন্য আর কোনো উদাহরণের দরকার নেই। এখন তো জনপ্রতিনিধিই নেই, ওয়াদা নেই। সুতরাং তাঁরা তো বঞ্চিত হবেই। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতি রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন বৈষম্যমূলক, বাঙালিদের দৃষ্টিভঙ্গি আরও বেশি বৈষম্যমূলক। বিভাজনরেখাটি মুছে ফেলতে হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার পাশাপাশি তাদের সংস্কৃতিকে জানতে হবে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর (ইউএনডিপি) প্রজেক্ট ম্যানেজার রব স্টোলম্যান বলেন, বৈষম্য দূর করার দায়িত্ব সরকারের। শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল বাংলাদেশ গড়তে হলে যুবাদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। যুবাদের দায়িত্বশীল নাগরিকে পরিণত করতে হবে। এই নাগরিকেরাই বাংলাদেশকে আরও শান্তিপূর্ণ ও টেকসই করে গড়ে তুলবে।

আলোচনা সভায় দুটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আইপিডিএসের প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব দ্রং এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শুচিতা শরমিন।

দিনাজপুর, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলে বসবাসরত সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়ে। এতে সামাজিক নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তাসহ এই জনগোষ্ঠির বৈষম্যের নানা বিষয় উঠে এসেছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আকমল শরিফ। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সমতলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন।