Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব: সুলতানা কামাল

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার হালজাই গ্রামের কড়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল। দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। ছবি: প্রথম আলো

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু দেশের প্রান্তিক এসব মানুষকে এগিয়ে আনতে প্রচেষ্টা তেমন চোখে পড়ে না। এসব মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় তাদের বিচার পাওয়ার সুযোগ বাড়াতে হবে।

দিনাজপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সুলতানা কামাল। আজ শনিবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার হালজাই গ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কড়াদের নিরাপত্তা ও তাদের ওপর হামলার ন্যায়বিচার চেয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের আগে সুলতানা কামালের নেতৃত্বে মানবাধিকারকর্মীদের একটি দল হালজাই গ্রামে বসবাসরত কড়া সম্প্রদায়ের এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে। সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ন্যাশনাল অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম (ন্যাপ)।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, গত ৬ মার্চ বিরল উপজেলার হালজাই গ্রামে সন্ত্রাসীরা ভূমি দখলের চেষ্টায় নিরীহ কড়া সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে, কিন্তু এখনো প্রশাসনিকভাবে তার কোনো বিচারিক প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়নি। নানাভাবে ভূমিদস্যুদের দ্বারা নারী ও পুরুষ উভয়েই হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।

সুলতানা কামাল বলেন, হালজাই এলাকায় একসময় ৫২ একর জমিতে বসবাস করত কড়া সম্প্রদায়ের তিন শতাধিক মানুষ। এই সম্প্রদায় বিলুপ্ত হতে হতে এখন মাত্র ১৮টি পরিবারে ৭৫ জনের মতো রয়েছে। তাদের জমি দখল হতে হতে এসে ঠেকেছে মাত্র ৬ একরে। সেই ৬ একর জমিও তারা দখলদারদের আতঙ্কে চাষাবাদ করতে পারছে না।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে অনেকেই দেশের সীমান্ত পেরিয়ে প্রাণভয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে চলে গেছে। এই সম্প্রদায়ের মানুষ দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণও করেছে। অসহায় ও নিরীহ মানুষ হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তাদের নাম ওঠেনি। সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের প্রতি জীবিত দুই মুক্তিযোদ্ধার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান সুলতানা কামাল।

বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, বিরলের কড়া সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদ জীবনযাপনের অধিকার চায়। উচ্ছেদের হুমকিতে থাকা কড়া সম্প্রদায়ের এসব মানুষ বসবাসের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। সব সময় তাদের দিন কাটছে আতঙ্কে। অবিলম্বে তাদের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নিরাপদ জীবনযাপন ও বসবাসের অধিকার প্রদানের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ন্যাপের সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, দিনাজপুরের সাবেক পৌর মেয়র মো. শফিকুল হক, দিনাজপুর জেলা অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্মের সভাপতি চিত্ত ঘোষ, বেসরকারি সংগঠন হেক্স ইপারের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর আবুল হাসনাত প্রমুখ।