Thank you for trying Sticky AMP!!

খাট ব্যবসায় জড়িত ২২ ব্যক্তি, ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

ফাইল ছবি

প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের মাদক ‘খাট’ উদ্ধারের ঘটনায় ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত সংস্থা (সিআইডি)। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আরশেদ আলী মণ্ডল।

সিআইডি বলছে, মাদক ‘খাট’ ব্যবসার সঙ্গে দেশি-বিদেশি ২২ জন জড়িত আছেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে নাম-ঠিকানা পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

সিআইডি বলছে, ইথিওপিয়া থেকে মাদকদ্রব্য খাট বাংলাদেশে পাঠানো হয়। ইথিওপিয়ার চার প্রতিষ্ঠানের নাম পাওয়া গেছে। ওই চারটি প্রতিষ্ঠান হলো জেমেরা ট্রেডিং, আকাসা ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট, রাহেব ট্রেডিং এবং মুলুকেন।

অভিযোগপত্র বলছে, ইথিওপিয়ার নাগরিক মোহাম্মদ আলী আসামি রাশেদুল আমিনের নামে গ্রিন টি নামে মাদক খাট পাঠায়। ওই খাট পরে আমেরিকায় পাঠানোর কথা ছিল। অপর আসামি সাইফুল আলমের সঙ্গে আফ্রিকার নাগরিক মোহাম্মদের সঙ্গে কাকরাইলের একটি মসজিদে পরিচয় হয়। তাঁর বন্ধু হলেন লন্ডনপ্রবাসী ফেরদৌস। তিনি সাইফুলকে ফোন করে জানান, মোহাম্মদ তাঁর ঠিকানায় গ্রিন টি পাঠাবে। আসামি রাশেদের বন্ধু মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত কামরুল। কামরুল রাশেদকে ফোন করে জানান, তাঁর নামে ইথিওপিয়া থেকে চা–পাতা আসবে। সেগুলো গ্রহণ করে তা পাঠাতে হবে ফ্রান্সে।

অভিযোগপত্রভুক্ত ১১ আসামি হলেন সিলেটের উজ্জ্বল মিয়া মুন্না (৩২), গোপালগঞ্জের রাশেদুল আমিন (৫৫), ময়মনসিংহের আতিকুল্লাহ বাহার (৩৭), পাবনার সাইফুল আলম (৫২), মুন্সিগঞ্জের মোহাম্মদ জয় ওরফে রানা (৫২), শরীয়তপুরের এমদাদুল হক সরদার (৩০), দোহারের রাশেদ হোসেন (২৮), মাদারীপুরের মাহাবুব আলম হাওলাদার (৪৮), কিশোরগঞ্জের ওবাইদ উল্লাহ (৩০), নোয়াখালীর আমিন উল্লাহ (৪৬) ও জসিম উদ্দিন (৪২)। তাঁদের মধ্যে পলাতক আছেন জসীম, ওবাইদ উল্লাহ ও মাহাবুব আলম। বাকিরা কারাগারে আছেন।

গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সিআইডি অভিযান চালিয়ে পল্টনের জেনারেল পোস্ট অফিস (জিপিও) থেকে ৯৬ কার্টুন খাট উদ্ধার করে। উদ্ধার করা খাটের আনুমানিক মূল্য ২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৫ হাজার ৪০০ টাকা। এ ঘটনায় সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাসায়নিক পরীক্ষায় জানা গেছে, খাটের পাতায় ‘ক্যাথিন ও নরএফিড্রিন পাওয়া গেছে, যা নেশার উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

‘খাট’ ব্যবসায় জড়িত থাকলেও পূর্ণাঙ্গ নাম–ঠিকানা না পাওয়া ১১ জনের মধ্যে ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন আলমগীর হোসেন, মতি মিয়া, আকরামুল, মুশফিক, মিজানুর, আরিফ, কামরুল, রুহুল আমিন এবং ইথিওপিয়ার নাগরিক মোহাম্মদ।

পুলিশ বলছে, ‘খাটের’ জন্মস্থান আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ায়। মাদক ব্যবসায়ীরা ‘খাট’কে গ্রিন টি দেখিয়ে তা ডাক বিভাগের মাধ্যমে আমদানি করে আসছেন। আবার তা বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রিন টি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে।

ইথিওপিয়া থেকে ‘খাটের’ চাষাবাদ প্রথমে শুরু হয় ইয়েমেনে। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে কেনিয়া, উগান্ডা, সোমালিয়া ও জিবুতিতে। বাংলাদেশের পানপাতার মতো আফ্রিকার দেশগুলোতে খাট খাওয়া হয়। ১৯৮০ সালে প্রথম খাটকে মাদক বলে ঘোষণা করে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও)। বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনেও এটি মাদক বলে গণ্য। মামলায় বলা হয়েছে, ‘খাট’ মাদকদ্রব্য, যা নেশার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত উদ্ভিদের পাতা বিশেষ।