Thank you for trying Sticky AMP!!

খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নয়নে জোর দেওয়া উচিত

সিপিডির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বক্তব্য দিচ্ছেন মালয়েশিয়ার প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ জোমো কোয়ামে সুন্দরম। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের মতো দেশে খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নয়নে বেশি জোর দেওয়া উচিত। শুধু খাদ্যের উৎপাদন না বাড়িয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ ও খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। 

আজ শনিবার এসব কথা বলেন মালয়েশিয়ার প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ জোমো কোয়ামে সুন্দরম। তিনি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বক্তব্য দিয়েছেন। রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এই অনুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।
জোমো কোয়ামে সুন্দরম বর্তমানে মালয়েশিয়ার কাউন্সিল অব অ্যামিনেন্ট পারসনসের বিশেষ সদস্য। তিনি জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্সের (ডিইএসএ) অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে কাজ করেছেন।
জোমো কোয়ামে সুন্দরম তাঁর বক্তৃতায় আরও বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমলেও ক্ষুধার্ত মানুষের অনুপাত বাড়ছে। তবে তিনি এই সংখ্যা কত, তা জানাননি। তিনি আরও জানান, ২০১২-১৪ সময়ে সারা বিশ্বে ৮০ কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত থাকত। ওই সময়ে ২০০ কোটি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগত। এ ছাড়া ৫ বছরের কম বয়সী ৪ কোটি ২০ লাখ শিশু অতিরিক্ত ওজনধারী। আর ২১০ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অতিরিক্ত ওজন। তাঁর মতে, খাদ্যাভ্যাসের কারণে নানা ধরনের রোগবালাইয়ের শিকার হয় মানুষ।
জোমো কোয়ামে সুন্দরমের মতে, মানুষের জীবন রক্ষায় অর্থনীতিতে তৃতীয় বৃহত্তম বোঝা হলো অতিমাত্রায় স্থূলতা। এর আর্থিক মূল্য হলো ২ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্য দুটি হলো সশস্ত্র সংঘাত ও ধূমপান। এই দুটি বোঝার আর্থিক মূল্য হলো ২ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার করে। তিনি মত দেন, খাদ্যনিরাপত্তার জন্য উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি কেমিক্যাল ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। কেমিক্যাল ব্যবহারে স্বাস্থ্যহানির সুযোগ থাকে।
জোমো কোয়ামে সুন্দরম তাঁর বক্তৃতায় আরও বলেন, সারা বিশ্বে বৈষম্য বাড়ছে। গরিবের তুলনায় ধনীরা বেশি সম্পদশালী হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের মতো সবচেয়ে গরিব ২০টি দেশের সঙ্গে সবচেয়ে ধনী ২০টি দেশের তুলনা করেন। সেখানে তিনি বলেন, ১৯৬০-৬২ সালের দিকে সবচেয়ে গরিব ২০টি দেশের মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ছিল ২১২ ডলার। তখন সবচেয়ে ধনী ২০টি দেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ১১ হাজার ৪১৭ ডলার। ৪ দশক পরে ২০টি গরিব দেশের মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ২৬৭ ডলার। ৪ দশকের ব্যবধানে মাথাপিছু জিডিপি বেড়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে ওই সময়ে ধনী ২০টি দেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৩৩৯ ডলার। ৪ দশকে ধনী দেশের মাথাপিছু জিডিপি তিন গুণ বেড়েছে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, চীন এশিয়ার অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ভারতও এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের উন্নয়ন তথা বাণিজ্যের হাওয়া এখন এশিয়ায়। তাই এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আরও বেশি পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করা উচিত।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। সূচনা বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এ ছাড়া প্রশ্নোত্তর পর্বে কথা বলেন সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডির বিশেষ ফেলো ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক কে এ এস মুরশিদ, পরিবেশবিদ আতিক রহমান, ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমেদ, অধ্যাপক আমিনুল করিম, আইনজীবী সারা হোসেন প্রমুখ।