Thank you for trying Sticky AMP!!

গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করতে নতুন দল নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না

গণসংহতি আন্দোলনের গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো

নির্বাচন কমিশন নতুন রাজনৈতিক চিন্তা ও দলের বিকাশ রুদ্ধ করার ভূমিকা পালন করছে। সক্রিয় ও প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের অভিসন্ধি নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

‘রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া, নির্বাচন ও সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার’ শীর্ষক ওই আলোচনায় দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য দেন। তাঁরা দেশের বিভিন্ন সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখ্তার।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আইন যে কারণে করা হয়েছে, বর্তমান কমিশন তার বিপরীতে একে নতুন রাজনৈতিক চিন্তা ও দল নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। সারা বছর রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদন গ্রহণ করার বিষয়টি মুক্ত রাখার জন্য গণসংহতি আন্দোলনের দাবির সমর্থন করে তিনি বলেন, ‘এ উদ্দেশ্যেই আমাদের সময়ে নির্বাচন কমিশনের জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছিল।’
বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, নির্বাচন কমিশন হয়তো দলবিহীন গণতন্ত্র চাইছে। তাই তারা নতুন কোনো রাজনৈতিক দলকে আর নিবন্ধন দিচ্ছে না। কেননা নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর জনমুখী রাজনীতি বিকশিত হলে অগণতান্ত্রিক শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
প্রবীণ রাজনীতিবিদ, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘নিবন্ধন ছাড়াই জেল খাটলাম, মামলার শিকার হলাম, মুক্তিযুদ্ধ করলাম...আজকে নিবন্ধন দিয়ে আমাদের খেলো করা হচ্ছে।’
নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনব্যবস্থা সংস্কারের দাবি করে বলেন, নিবন্ধনের আইনটি করা হয়েছিল নামসর্বস্ব কর্মসূচিবিহীন দল যেন নির্বাচনে ব্যবহৃত না হয়। অথচ এখন সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আহমেদ কামাল বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র আইনের বেড়াজালে নাগরিকদের বন্দী করে ফেলার ফিকির করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামই এর বিপরীত স্রোত তৈরি করতে পারে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ভোট মানুষ দেবে কি না, সেটা ভোটারদের প্রশ্ন। নির্বাচনে দাঁড়ানো রুদ্ধ করার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনকে কে দিল? ১ শতাংশ ভোটার সমর্থকের স্বাক্ষর থাকার যে আইন করেছেন, রাতের বেলা সেই ভোটারের বাড়িতে যে পুলিশ বা মাস্তানরা ভয় দেখাবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে?
জোনায়েদ সাকি বলেন, নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন জনগণকে ক্ষমতাহীন করতে চাইছে। এই রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের আইনগুলো খুবই অস্পষ্ট। ফলে পুলিশ যেমন রায় দিচ্ছে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হওয়ার, তেমনি নির্বাচন কমিশন রায় দিচ্ছে শর্ত পূরণ না করায় নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।