Thank you for trying Sticky AMP!!

গণপিটুনির কারণ খতিয়ে দেখা হবে: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফাইল ছবি

দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার পরিমাণ কমেছে বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, ‘একটাও যাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা না হয়, আমরা সে দিকেই অগ্রসর হচ্ছি। নির্যাতন বন্ধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন কমেছে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম জাতিসংঘে নির্যাতনবিরোধী প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতিসংঘ নির্যাতনবিরোধী কনভেনশন (ইউএনসিএটি) বিষয়ে নাগরিক সমাজের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের যেখানেই অপরাধ হচ্ছে, সেখানেই তা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধর্ষণ বা অন্যান্য নির্যাতন বন্ধ করার জন্য সরকার অনেক চেষ্টা করছে। মাদক নির্মূলের জন্যও চেষ্টা করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, অ্যাসিড সন্ত্রাস দমনে যেমন দেশের মানুষ সবাই একত্র হয়েছিল, তেমনি এসব অপরাধ দমনে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বৈষম্য দূর করার জন্য সরকার বৈষম্য নিরোধ আইন প্রণয়ন করছে। এ আইনের খসড়া ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। আগামী মাসে এটি মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে এবং সেখানে অনুমোদিত হলে সংসদের আগামী অধিবেশনে এটি পাসের জন্য পাঠানো হবে।

আনিসুল হক বলেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে জনগণকে শাসন করার জন্য পুলিশ বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, এই দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হওয়ার ব্যবস্থা প্রথমে শেখ হাসিনাই নিয়েছেন। তিনি এই দেশে অবশ্যই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে যাবেন।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ড, ধর্ষণ ও গণপিটুনির ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যেকোনো ঘটনার একটা স্বাভাবিকতা আছে আর একটা অস্বাভাবিকতা আছে। আপনারা যদি আগুন লাগার ঘটনা দেখে থাকেন তাহলে দেখবেন, এটা কনটিনিউয়াস ঘটতে থাকল। তারপর ধর্ষণের ঘটনা কনটিনিউয়াস ঘটতে থাকল। এখন গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। এটা একটা-দুটা দুর্ঘটনা হলে ঠিক আছে। পরিসংখ্যান কী বলে, ১১-১২টা হয়েছে। এখানে এটা অস্বাভাবিক।’

তিনি বলেন, ‘আমি এই জিনিসটা বলতে চাই, যেখানে গত বছর একটাও গণপিটুনির ঘটনা নাই, সেখানে হঠাৎ এক মাসে ৭ দিনের মধ্যে ১১টা গণপিটুনির ঘটনা ঘটে গেল। তার মানে হচ্ছে এখানে যেটা আমরা তদন্ত করতে চাচ্ছি, যেটা আমরা এত বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু আমি যেটা বলেছি, সেটা হচ্ছে এই অ্যাংগেলেও আমরা তদন্ত করব।’

‘এটার করণটা কী? যদি আগুন লাগে, তাহলে ৫টা-৭টা ঘটনা একসঙ্গে হয়ে যায়। যদি ধর্ষণ হয় তাহলে ১০টা-১৫টা ঘটনা একসঙ্গে হয়ে যায়। এটি কি প্রো-অ্যাকটিভনেস অব দ্য মিডিয়া? তা তো না। ঘটনা হচ্ছে বলেই মিডিয়া কিন্তু রিপোর্ট করে। হঠাৎ গত ছয় মাসে কোনো ঘটনা নাই। একটা ঘটনা ঘটল, তারপরই ৬টা, ১০টা ও ১৫টা ঘটে যায় এটা অস্বাভাবিক। সেই ক্ষেত্রেই আমি বলছি যে, এখানে যারা গণতন্ত্র প্রতিহত করতে চায়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যেটা চলছে, সেটাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। সেটার কারণটা আমরা খতিয়ে দেখব এবং এটাও একটা কারণ।’

মন্ত্রী বলেন, কাউকে পিটানো সেটা গণ হোক, ব্যক্তি হোক, সেটা একটা অপরাধ। গণপিটুনির ঘটনায় যাদের ধরা হচ্ছে তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এদের বিচারের আওতায় আনা হবে। দেশের প্রচলিত আইনে যে বিচার তাদের হওয়া উচিত, সেই বিচার হবে। দেশে যথেষ্ট ভালো আইন আছে। এগুলোতে এসব অপরাধ ফেলতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহিদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক বক্তব্য দেন।