Thank you for trying Sticky AMP!!

গ্রীষ্মে ধুলো, বর্ষায় কাদা

ভাঙাচোরা আর গর্ভে ভরা সড়কে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। গতকাল বিকেলে নাইওরপুল-টিলাগড় সড়কের মিরাবাজার এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

কার্পেটিং উঠে গেছে। বেরিয়ে এসেছে ইট-পাথর। স্থানে স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ। শুষ্ক মৌসুমে ধুলো ওড়ে আর সামান্য বৃষ্টি হলেই জলকাদায় পুরো সড়ক একাকার হয়ে যায়।

এ দৃশ্য সিলেট নগরের গুরুত্বপূর্ণ নাইওরপুল-টিলাগড় সড়কের। সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কের অন্তর্ভুক্ত এ অংশের প্রায় আধা কিলোমিটার ছয় মাস ধরেই ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে হাজারো যানবাহন চলাচল করে। নগরের মীরাবাজার, সেনপাড়া, শিবগঞ্জ, যতরপুর, শিবগঞ্জ, উপশহর (একাংশ), সাদিপুর, শাপলাবাগ, রায়নগর, দর্জিপাড়া, বালুচর, টিলাগড়, সোনারপাড়া, লামাপাড়া এবং সিলেট সদর, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার মানুষজন চলাচল করে। এ ছাড়া পর্যটন স্পট জাফলং, শ্রীপুর, লালাখাল এলাকায়ও এ সড়ক দিয়েই যেতে হয়। অথচ দিনের পর দিন সড়কটি খানাখন্দে ভর।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মীরাবাজার এলাকায় সড়কের অংশটি সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য অংশেও কমবেশি খানাখন্দ রয়েছে। মীরাবাজার এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক দিন ধরে সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। বারবার সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানালেও তা কার্যকরে কোনো ভূমিকাই প্রতিষ্ঠানটি নিচ্ছে না। সোনারপাড়া এলাকার গৃহিণী আসমা বেগম বলেন, ‘চার মাসের শিশুকে কোলে নিয়ে রিকশা করে বাসায় ফিরছি। খানাখন্দে রিকশার চাকা পড়ামাত্রই শিশুটি ভয় আর আতঙ্কে কেঁদে উঠছে।’

সড়কটির আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খানাখন্দ থাকায় এ সড়কে যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করে। এতে প্রায়ই তীব্র যানজট দেখা দেয়। এ ছাড়া ছোট-বড় গর্তে রিকশার চাকা পড়ে উল্টে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকে যাত্রীরা। গর্তের কারণে বিশেষত নারী, বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু ও রোগীদের চলাচলে ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি পোহাতে হচ্ছে।

শিবগঞ্জ এলাকায় রিকশাচালক মাইনুদ্দিন (৪০) বলেন, তিনি নাইওরপুল-টিলাগড় সড়ক দিয়েই বেশি যাত্রী আনা-নেওয়া করেন। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। ভাঙাচোরা এ সড়কে রিকশা চালাতে বেশ বেগ পেতে হয়। রায়নগর এলাকার বাসিন্দা শিবারণ দাশ বলেন, ভাঙাচোরা সড়ক হওয়ায় এখান দিয়ে যাওয়া-আসা করতে গেলে রিকশা চালকেরা অনেক সময় অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানিয়েছে, নগরের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের আওতাধীন। তবে নগরের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এ সড়কের সংস্কারকাজ সিটি কর্তৃপক্ষই করে থাকে। গত কয়েক মাস আগে এ সড়কের দুই পাশে নর্দমা প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। সে কাজ এখনো চলমান। ওই নর্দমা নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার পর সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে। ফলে সংস্কারের কাজ শুরু করতে আরও অন্তত পাঁচ মাস সময় লেগে যাবে।

ভুক্তভোগী যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে খানাখন্দ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই মূল সংস্কারকাজ শুরুর আগে নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে জরুরি ভিত্তিতে কিছুটা সংস্কারকাজ করা যেতে পারে। এতে ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নর্দমার কাজ শেষ না হলে মূল সড়ক সংস্কারের কাজ কোনোমতেই শুরু করা যাবে না। তাই সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হতে আরও চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগবে। এ সময়টুকু নগরবাসীকে একটু দুর্ভোগ সহ্য করতে হবে। তবে সড়কের কোনো অংশ বেশি বিধ্বস্ত থাকলে অবশ্যই সেখানে জরুরি সংস্কারকাজ করা হবে।