Thank you for trying Sticky AMP!!

গ্রেপ্তারের ৪৫ ঘণ্টা পর আদালতে আসামি, ওসিকে ভর্ৎসনা

আসামি গ্রেপ্তারের ৪৫ ঘণ্টা পর আদালতে সোপর্দ করায় ও সিসি (কমান্ড সার্টিফিকেট) আদালতে জমা না দেওয়ায় ঝালকাঠির রাজাপুর থানার ওসি জাহিদ হোসেনকে ভর্ৎসনা এবং কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে মামলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা র‌্যাব-৮-এর ডিএডি আনোয়ারুল ইসলাম ও রাজাপুর থানার উপপরিদর্শক ফিরোজ আলমকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ভর্ৎসনা করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শেখ আনিছুজ্জামান এ আদেশ দেন।

রাজাপুর থানার জিআর ৭৯/১৯ মামলার বিভিন্ন ত্রুটি সম্পর্কে মামলা-সংশ্লিষ্ট ওই তিন কর্মকর্তার কাছে জানতে চান আদালত। অভিযানে যাওয়ার অনুমোদন-সংক্রান্ত সনদ (সিসি) আদালতে জমা দেওয়ার কথা বললে সেটা দেননি। কিন্তু তিনজনই আদালতে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। আদালত তাদের ভর্ৎসনা করে আগামী ২৯ মে আবারও আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে বলেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৫টায় বরিশাল র‌্যাব-৮-এর ডিএডি মো. আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি টহল দল রাজাপুর মেডিকেল মোড় এলাকা থেকে ১ হাজার ৩১৫ পিস ইয়াবাসহ আতিকুল ইসলাম বাবু নামে এক যুবককে আটক করে। আটকের ২০ ঘণ্টা পর ৯ এপ্রিল বেলা দেড়টায় ডিএডি আনোয়ারুল ইসলাম রাজাপুর থানায় ৯ জনের নামে একটি এজাহার দায়ের করেন। একই সময় আতিকুল ইসলামকে থানায় হস্তান্তর করেন। কিন্তু আটকের পর ২০ ঘণ্টা আসামি কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে এজাহারে কোনো ব্যাখ্যা ছিল না।

রাজাপুর থানার ওসি এজাহার গ্রহণ করে উপপরিদর্শক ফিরোজ আলমকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেন। এসআই ফিরোজ আলম মামলা দায়েরের ২৫ ঘণ্টা পর ১০ এপ্রিল বেলা ৩টায় আসামি আতিকুলকে আদলতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রিমান্ড শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মানিক আচার্য্য গ্রেপ্তারের ৪৫ ঘণ্টা পর আসামিকে আদালতে হাজির করা, রাজাপুর মেডিকেল মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হলেও রাজাপুর থানায় সোপর্দ বা অবহিত না করে আসামিকে বেআইনিভাবে অজ্ঞাতস্থানে ২০ ঘণ্টা রাখার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন।
আদালত এজাহার, মামলার ফরোয়ার্ডিং, জব্দতালিকা, রিমান্ড আবেদন পর্যালোচনা করে রাজাপুর থানার ওসি জাহিদ হোসেন, ডিএডি আনোয়ারুল ইসলাম এবং তদন্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আলমকে ৭ মে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর আদেশ দেন।

আদালতের নির্দেশে ৭ মে মঙ্গলবার ওই তিনজন আদালতে হাজির হলে বিচারক শেখ আনিছুজ্জামান এজাহারে নানা অসংগতির বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘ইতিপূর্বে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি সভায় বারবার মামলার সঙ্গে সিসি, এমসিসি এবং জিডির কপি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলেও আপনারা তার কোনো গুরুত্ব দেন না। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদ, ফৌজদারি কার্যবিধি এবং পিআরবি অনুযায়ী একজন গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে অবশ্যই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থিত করতে হবে কিন্তু আপনারা তা মানছেন না। এক থানা থেকে আসামি গ্রেপ্তার করে সেই থানাকে না জানিয়ে অন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এজাহারে সিসির বিষয়ে বলা হলেও তার কপি জমা দেওয়া হচ্ছে না।’
শুনানির এক পর্যায় তিনজনই আদালতে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আদালত আগামী ২৯ মে অধিকতর শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করেন। ধার্য তারিখে তিনজনকেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আদালতে হাজির থাকতে আদেশ দেন।