Thank you for trying Sticky AMP!!

ঘরে খাবার নেই, ত্রাণের জন্য আকুতি

বগুড়ার শেরপুরে বন্যার পানিতে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে যাওয়ার রাস্তাসহ সেতুটি ডুবে আছে। গতকাল তোলা ছবি। প্রথম আলো

ঘরে বন্যার পানি। হাতে কোনো কাজ নেই। বাড়িতে কোনো চাল-ডালও নেই। অনাহারে দিন কাটছে তাঁদের। বন্যার কারণে এমনই দুরবস্থা বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর পূর্বপাড়ার মোহনা গ্রামের ৫০টি পরিবারের। এসব পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে দ্রুত ত্রাণ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।

সোমবার বিনোদপুর গ্রামে বাড়ির আঙিনায় কথা হয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নূরি বেগমের সঙ্গে। কেমন আছেন? জানতে চাইলে তিনি শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, তিনি হাতের কাজ করেন। বন্যার পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় ওই কাজ এখন বন্ধ। স্বামী কাজ করেন ফসলের মাঠে। মাঠগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। কোরবানি ঈদের দিন তাঁর ঘরে ছিল আধা সের চাল। এই চাল দিয়ে আধপেট খেয়ে ছিলেন তাঁর পরিবারের চারজন সদস্য। ঈদ উপলক্ষে পরদিন দুপুরে বিনোদপুর গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁদের পরিবারের সদস্যদের একবেলা ভালো খাবার খাইয়েছিলেন। এরপর থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত তাঁদের পরিবারের সবাই উপোস রয়েছেন।

বিনোদপুর গ্রামের পাশেই বাঙ্গালী নদী। বাঙ্গালী ও করতোয়া নদীর মোহনায় এই গ্রাম। নদীর পানি বাড়ায় গ্রামে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। এই গ্রামে প্রবেশের একটি সড়ক রয়েছে। সড়কের মাঝখানে একটি সেতু। সড়ক ও সেতু দুটি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকে মাচা করে বাস করছেন।

বিনোদপুর গ্রামের সাগর আলী বলেন, বিনোদপুর গ্রামের অন্তত ৫০টি পরিবারের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। গতকাল পর্যন্ত এ গ্রামের কোনো পরিবার সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পায়নি। একই গ্রামের পল্লিচিকিৎসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রামের সব পরিবার দরিদ্র। প্রতিদিন পরিশ্রম করে যে আয় করে, সেই টাকা দিয়েই তাদের সংসার চলে।

স্থানীয় সুঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে তাঁর ওয়ার্ডে সরকারিভাবে ১৬১টি পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বন্যাকবলিত বিনোদপুর গ্রামের ছয়জনকে তিনি এই চাল দিতে পেরেছেন। এ ছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুতের কোনো নির্দেশনাও তিনি এখনো পাননি।

এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শামসুন্নাহার শিউলি বলেন, বন্যার কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা প্রস্তুতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মঙ্গলবারের মধ্যে এই তালিকা তৈরি করে তাঁর দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদুল আজহা উপলক্ষে বরাদ্দ দেওয়া ভিজিএফের চাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিতরণ করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছিল। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।