Thank you for trying Sticky AMP!!

বাড়ছে লাশের মিছিল

আশপাশের ভবনেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।

রাজধানীর চকবাজার এলাকায় রাজ্জাক ভবনে লাগা আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এক এক করে বেড়েই চলছে। প্রথম অবস্থায় আগুন নিয়ন্ত্রণের পর পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এরপর ১১, ১২, ২৩...৩৬, ৪১, ৪৯... এভাবে বাড়তে থাকে মৃত মানুষের সংখ্যা। ভোর পাঁচটার আগ পর্যন্ত মরদেহ পাওয়া যায় ৪১টি। সর্বশেষ পাওয়া খবরে বৃহস্পতিবার সাকাল ৮টায় জানা গেছে এখন পর্যন্ত ৬৯টি মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। পুড়ে যাওয়া লাশগুলো এখনো সনাক্ত করা যায়নি।

এর আগে প্রায় ৫ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ৩টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। তবে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যাচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নেভাতে আরও সময় লাগবে বলে ফায়ার সার্ভিসের তরফ থেকে বলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণের এক ঘণ্টা পর সেখান থেকে ২৩টি লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান। তবে উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর নিহতের সঠিক সংখ্যা জানা যাবে বলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে বলেন। 

ইতিমধ্যে ওই এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের একটি অস্থায়ী কমান্ডপোস্ট বসিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

অ্যাম্বুলেন্সে করে উদ্ধারকৃত মরদেহ আনা হচ্ছে ঢাকা মেডিকেলে। ছবি: প্রথম আলো

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। বুধবার দিবাগত রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুরিহাট্টা মসজিদ গলির রাজ্জাক ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। রাত ৩টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। সরু গলি হওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। চকবাজার থানার সামনে গাড়ি রেখে সেখান থেকেই পাইপের মাধ্যমে পানি নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের পানির ট্যাংক থেকেও পানি সংগ্রহ করে ফায়ার সার্ভিস।

আগুন লাগার পর রাত ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত পাশের প্রায় চারটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চকবাজার এলাকার গ্যাসলাইন থেকেও ওই সময় আগুন বের হচ্ছিল। অগ্নিকাণ্ডের পর ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজ্জাক ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, রাজ্জাক ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা ছিল এবং ওই ভবনের পাশে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে। যেগুলোর প্রতিটিতে চার থেকে পাঁচটি করে গ্যাসের সিলিন্ডার রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে পারে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১০ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনি‌টে ও ৪০ জন জরু‌রি বিভা‌গে চি‌কিৎসার জন্য এস‌ছেন। আহত ও আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীরা এখনো ঢাকা মেডিকেলে আস‌ছেন। বার্ন ইউনি‌টে চি‌কিৎসাধীন‌দের ম‌ধ্যে রেজাউল ও সোহাগ মারাত্মকভা‌বে পু‌ড়ে গেছেন। রেজাউ‌লের শরী‌রের ৬০ শতাংশ ও সোহা‌গের ৫১ শতাংশ পু‌ড়ে গে‌ছে। অগ্নিদগ্ধ হ‌য়ে হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসাধীন আনোয়ার, মাহমুদ, জা‌কির (১), সে‌লিম, রেজাউল, জা‌কির (২), হেলাল ও মোজাফফরের নাম জানা গেছে।
এর আগে রা‌মিম না‌মের একটি শিশু চি‌কিৎসা নি‌য়ে চ‌লে গে‌ছে বলে জানা গেছে। তবে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন: 
চকবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে ৩২টি ইউনিট, আহত অনেকে