Thank you for trying Sticky AMP!!

চট্টগ্রাম ওয়াসা

চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডিও বেতন বাড়াতে চান

মহামারি করোনার মধ্যে বেতন-ভাতা বাড়িয়ে নিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। তাঁর মতো চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহও বেতন বাড়ানোর আবেদন করেছেন। এক লাফে দেড় শ শতাংশ মূল বেতন বৃদ্ধির জন্য বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন তিনি।

ওয়াসার নথিপত্র অনুযায়ী, এ কে এম ফজলুল্লাহের মূল বেতন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তিনি চান সাড়ে ৪ লাখ টাকা। তাঁর আবেদনমতে, ঢাকা ও খুলনা ওয়াসার এমডিদের মূল বেতন চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির দ্বিগুণ বা তার বেশি। তাই নিজের বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদন করেছেন।

এ কে এম ফজলুল্লাহ

এমডির আবেদন গত ৪ মে অনুষ্ঠিত ওয়াসা বোর্ডের ৬১তম সাধারণ সভায় উপস্থাপন করা হয়। সভায় এমডির বেতন-ভাতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বোর্ড সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যজিত কর্মকারকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই সভায় বোর্ড সদস্যদের উপস্থিতি সম্মানীও দুই হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে, যা আগামী সভা থেকে কার্যকর হবে।

ওয়াসার এক বোর্ড সদস্য জানান, এমডির আবেদন অনুযায়ী মূল বেতন নির্ধারণ করা হলে সব মিলিয়ে তিনি প্রায় পৌনে আট লাখ টাকা বেতন-ভাতা পেতে পারেন।
বোর্ড চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ওয়াসার এমডির বেতন-ভাতা বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন। এ জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

এমডি ও বোর্ড সদস্যরা যখন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির চেষ্টায় আছেন, তখন গত ১১ বছরে অন্তত ৯ বার ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে। ২০১৩ সালে এক হাজার লিটার পানির দাম ছিল ৬ দশমিক ৫৮ টাকা। এখন সে পানির দাম ৯ টাকা ৯২ পয়সা। অর্থাৎ এই সময়ে দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ।

২০১১ সালে ঢাকা ওয়াসার আদলে চট্টগ্রাম ওয়াসাতেও এমডি পদ তৈরি করা হয়। এমডি পদে নিয়োগ পান তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল্লাহ। তিনি ২০০৯ সালের ৬ জুলাই চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। সর্বশেষ গত বছরের ১ অক্টোবর আরও তিন বছরের জন্য তাঁকে এমডি পদে নিয়োগ দেয় সরকার।

ওয়াসার নথিপত্র অনুযায়ী, শুরু থেকে এ কে এম ফজলুল্লাহকে মাসে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। এরপর তাঁর মূল বেতন নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, আপ্যায়ন, বিশেষ ভাতাসহ মিলিয়ে মোট পান ৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা, যা ২০১৬ সালের মে মাস থেকে কার্যকর হয়।

তবে এ কে এম ফজলুল্লাহ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন, ‘প্রথম থেকে যেটি পেতাম, এখনো সেটি পেয়ে আসছি। যেহেতু সবকিছুর মূল্য বাড়ছে। তাই আবেদন দিয়েছিলাম, যদি বেতন-ভাতা বাড়ায়। এখন তারা দিলে দেবে, না দিলে নেই। আমি এটি নিয়ে তেমন সিরিয়াস না।’

এদিকে ঢাকা ওয়াসার এমডির মাসিক বেতন পৌনে দুই লাখ টাকা বাড়িয়ে ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ নিয়ে গত শুক্রবার প্রথম আলোর শেষের পাতায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

করোনা মহামারির সময় চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডির বেতন-ভাতা বাড়ানোর আবেদনকে একেবারে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রাম জেলা সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, করোনায় মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান বেতন কমিয়ে দিয়েছে। জীবন-জীবিকার জন্য লড়ছেন মানুষ। ঠিক এই রকম মুহূর্তে বড় বড় পদে থাকা ব্যক্তিদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর চিন্তা মাথায় আসে কীভাবে? এটি দুঃখজনক।