Thank you for trying Sticky AMP!!

চাপ সৃষ্টি করে প্রার্থীদের সই নিল আওয়ামী লীগ!

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিআই) ভবনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক করলেন আওয়ামী লীগের তিন সাংসদ। চেম্বার ভবনে এর আগে কখনো দলীয় বৈঠক হওয়ার নজির নেই। ওই বৈঠকে চাপ সৃষ্টি করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কাগজে প্রার্থীদের সই নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চেম্বার ভবনে দলীয় বৈঠক ও চাপ প্রয়োগ করে সই নেওয়া নিয়ে নগরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত আগ্রাবাদ পুরোনো চেম্বার ভবনে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংসদ জাহাঙ্গীর কবির নানক, চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম এ লতিফ এবং চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাংসদ শামসুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে চট্টগ্রাম-১১ আসনের অধীনে ১০টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত একক প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে দলের ৩৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে বৈঠকে ডাকা হয়। তাঁদের কাছ থেকে সই নেওয়া হয়েছে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কাগজে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী জানান, তাঁরা মনে করেছিলেন, মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার দিকনির্দেশনা দিতে বৈঠক ডেকেছেন নেতারা। কিন্তু নেতারা মানসিক চাপ সৃষ্টি করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কাগজে সবার সই নিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর বলেন, ‘আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা এবং নির্বাচিত কাউন্সিলর। চলমান আন্দোলন ও নাশকতায় রাজপথে ছিলাম।’ তিনি ক্ষোভের সঙ্গে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এলাকায় আমাদের জনপ্রিয়তা আছে কি না, এ-সংক্রান্ত পয়েন্ট নাকি ঠিক করেছে সরকারি সংস্থাগুলো! জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে নাকি একক প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে? রাজনীতি করি জনগণকে নিয়ে। আমার জনপ্রিয়তা ঠিক রাখার জন্য সরকারের এজেন্সি অফিসগুলোতে হাজিরা দিতে হবে?’
আরেকজন প্রার্থী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। এলাকার লোকজনের খেদমত করার জন্য প্রার্থী হয়েছি। জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কাগজে সই নেওয়াটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এটা মেয়র প্রার্থীর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।’
আরেকজন প্রার্থী বলেন, ‘আমাদের স্যাক্রিফাইস করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন নেতারা। আমাদের মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন জয়ী হলে মহানগর কমিটি ভেঙে দিয়ে আমাদের মহানগর বা থানা বা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগে জায়গা দেওয়া হবে। তাঁরা কি আমাদের সামনে মুলা ঝুলিয়ে রেখেছেন?’
এ বিষয়ে সাংসদ এম এ লতিফ বলেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে বৈঠকটি ডাকা হয় এবং প্রত্যেক প্রার্থী একক প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। জোর করে কারও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কাগজে সই নেওয়া হয়নি। সবাই স্বেচ্ছায় সই দিয়েছেন।’ চেম্বার ভবনে দলীয় বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা আসলে পুরোনো চেম্বার ভবন। সেখানে বৈঠক করা অপরাধের কিছু নয়।’
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এবং সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের কাজে চেম্বার ভবনের মিলনায়তন ব্যবহার হয়। সেখানে রাজনৈতিক সভা করার সুযোগ নেই। এটা দলীয় কার্যালয় নয়।’