Thank you for trying Sticky AMP!!

ছাদ ও দেয়ালে ফাটল, ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান

গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষের ছাদের বিমের পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে আছে l প্রথম আলো

ভবনের ছাদ, দেয়াল, সিঁড়ি ও বিমের বিভিন্ন অংশে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ছাদ ও বিমের পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে আছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে। অনেক সময় পলেস্তারা খসে ছাত্রীদের গায়ের ওপর পড়ে। এতে পাঠদান চলাকালে তারা আতঙ্কে থাকে। বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে চিন্তিত থাকেন তাদের মা-বাবারাও।

এ করুণ চিত্র পটুয়াখালীর গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনের। গত এপ্রিল মাসে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষকেরা এখানে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছেন।

বিদ্যালয়ের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬১ সালে গলাচিপা উপজেলা সদরে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৬৫ সালে একটি একতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। আশির দশকে এই ভবনের দ্বিতীয় তলা নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রায় ৬৫০ জন ছাত্রী লেখাপড়া করছে। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক ২২ জন।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী রাইসা আমিন বলে, স্কুলের শ্রেণিকক্ষে এসে সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয় তাকে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, আবার ছাদ ও বিমের পলেস্তারা খসে তাদের গায়ে পড়ে।

স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অনি কাওসার বলে, শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলাকালে সব সময় তার নজর ছাদ ও বিমের ওপর থাকে। কারণ কখন পলেস্তারা খসে তার গায়ে পড়বে, তা তো সে জানে না।

স্কুলের শিক্ষিকা সালমা সুলতানা বলেন, এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে আটটি শ্রেণিকক্ষ ও একটি কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। এখানে শুধু ছাত্রীরাই নয়, তাঁরাও আতঙ্কে থাকেন কখন পলেস্তারা খসে তাঁদের ওপর পড়ে।

অভিভাবক মো. কাওসার বলেন, ‘অনেক দিন ধরে শুনে আসছি স্কুলের ভবন ব্যবহার না করার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। তারপরও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কার্যক্রম চলছে। মেয়েকে স্কুলে দিয়ে এলেও ছুটি শেষে বাসায় ফিরে না আসা পর্যন্ত চিন্তিত থাকি।’

গত ২ এপ্রিল স্কুল পরিদর্শন করে ভবনটি ব্যবহার না করার জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর পটুয়াখালী কার্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে ভবনের দেয়ালে বিপজ্জনক বড় বড় ফাটলসহ ছাদের ঢালাই উঠে গিয়ে ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে. রড বের হয়ে পড়েছে, ভবনের মেঝেও দেবে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় ভবনটি একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী। এতে যেকোনো মুহূর্তে ছাদ ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

১৮ এপ্রিল গলাচিপা পৌরসভার প্রকৌশলীরা স্কুলটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তাঁরাও বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী এবং এতে পাঠদান করা ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর পটুয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন,  বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ব্যবহার না করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।