Thank you for trying Sticky AMP!!

ছেলের সাজার অপেক্ষায় মা

আছিয়া বেগম তাঁর ছেলের সাজার অপেক্ষায়।

জয়পুরহাটের বদলগাছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে ইউএনওর কক্ষের পাশের কক্ষে হাতকড়া পরা এক তরুণ মেঝেতে বসা। চেয়ারে বসে আছেন দুজন পুলিশ সদস্য ও মধ্যবয়সী এক নারী।

জানা গেল, ওই নারীর নাম আছিয়া বেগম। হাতকড়া পড়া আশেক হোসেন (২০) নামের ওই তরুণ তাঁর ছেলে। আছিয়া বেগম তাঁর ছেলের সাজার অপেক্ষায় রয়েছেন। এ দৃশ্য গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারোটার। সেখানে থাকা সহকারী উপপরির্দশক (এএসআই) মিলন বলেন, বদলগাছি উপজেলার খামার আক্কেলপুর গ্রামের শাহাবুল আলমের ছেলে আশেক হোসেন (২০) দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। নেশার টাকা জোগাড় করতে বাড়ির জিনিসপত্র বিক্রি করে দেন তিনি। পাশাপাশি আশেক তাঁর মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে মাদকাসক্ত ছেলের বিরুদ্ধে ওই মা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। গতকাল সকালে আশেক হোসেন নিজ বাড়িতে বসে মাদক সেবন করছিলেন। পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে নেশার উপকরণসহ তাঁকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করে। ইউএনও জরুরি সভায় রয়েছেন। তাঁরা অপেক্ষা করছেন। আছিয়া বেগমও তাঁর ছেলের সাজার জন্য বসে আছেন।

আছিয়া বেগম বলেন, দুই সন্তানের মধ্যে আশেক ছোট আর মেয়ে বড়। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেকে হাফেজ বানানোর জন্য একটি মাদ্রাসায় দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন সেখানে থাকার পর বাড়িতে চলে আসেন আশেক। এরপর আর লেখাপড়া করেননি। এলাকার খারাপ লোকজনের সঙ্গে মিশতেন। পরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। অনেক চেষ্টা করেও ছেলেকে ভালো করতে পারেননি। আগেও একবার পুলিশ তাঁকে ধরে কারাগারে পাঠিয়েছিল। তখন তাঁরা কারাগার থেকে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনেন। বাড়িতে আসার পর আশেক ফের মাদক সেবন শুরু করেন এবং নেশার টাকার জন্য ঘরের জিনিসপত্র চুরি করে বিক্রি করে দেন।

আছিয়া বেগম বলেন, ‘নেশার টাকা না পেয়ে আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। সে নিজের হাত কেটে রক্ত বের করে সেই রক্তের সঙ্গে বড়ি মিশিয়ে নেশা করত। বাধ্য হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ বাড়িতে বসে নেশা করার সময় পুলিশ ধরে এনেছে। ছেলেকে যেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়, তার জন্য অপেক্ষা করছি।’

পরে এএসআই মিলন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাহী হাকিম ইউএনও মাসুম আলী বেগ তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আশেকের মা এতে খুশি হয়েছেন।