Thank you for trying Sticky AMP!!

ছোট শ্রেণিকক্ষে গাদাগাদি করে পাঠদান, দুর্ভোগ

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের দিগরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবন পরিত্যক্ত হওয়ায় কক্ষ–সংকটের কারণে গাছতলায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের দিগরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাদাগাদি করে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। ছোট শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ১৯৪৮ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। ১৯৬২ সালে নির্মিত বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি উপজেলা শিক্ষা কমিটি গত বছরের ১২ আগস্ট পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। ২০০৬ সালে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই ভবনের দুটি কক্ষকে চারটি কক্ষে ভাগ করা হয়েছে। এর একটি কক্ষ কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাকি তিনটিতে চলে পাঠদান।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের চারটি কক্ষই জরাজীর্ণ। ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়েছে। চারপাশের দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল। বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসে আছে শিক্ষার্থীরা। ১৮-২০ জন ধারণ ক্ষমতার একেকটি কক্ষে দ্বিতীয় পালায় বসেছে ৩০-৩৫ জন করে শিক্ষার্থী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাজেদা খাতুন বলেন, ছোট ছোট তিনটি কক্ষে ক্লাস নিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। গাদাগাদি করে বসা ও অতিরিক্ত গরমে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী কারিমা খাতুন ক্লাস চলাকালে অজ্ঞান হয়ে যায়। যেদিন খুব গরম পড়ে সেদিন মাঠে গাছতলায় ক্লাস নিতে হয়। সম্প্রতি এলাকার লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা ও বাঁশ-কাঠ নিয়ে পুরোনো টিন দিয়ে একটি শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা হয়েছে। এরপরও স্থান সংকুলান হচ্ছে না।
মাজেদা খাতুন জানান, বিদ্যালয়টি উপজেলার মধ্যে প্রথম শ্রেণির (গ্রেড-এ)। প্রায় প্রতিবছরই এই বিদ্যালয় থেকে একাধিক শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পায়। বিদ্যালয়টি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। তবু বিদ্যালয়টি শিক্ষা কর্তৃপক্ষের অবহেলার শিকার।
সহকারী শিক্ষক মো. খালেকুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ২৯১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রথম পালায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রতিদিন প্রায় ৪০ জন করে ছাত্রছাত্রী উপস্থিত হয়। পরের পালায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিরও প্রায় ৩৫ জন করে শিক্ষার্থী আসে। শ্রেণিকক্ষে তাদের জায়গার সংকুলান হয় না।
গোদাগাড়ী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সানাউল্লা প্রথম আালোকে বলেন, গতবছর উপজেলা শিক্ষা কমিটির বৈঠকে দুই দফা বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়। পরে এ সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে উপ-পরিচালকদের মাসিক সভায়ও একাধিকবার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীও বিষয়টি অবহিত আছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।