Thank you for trying Sticky AMP!!

জনশক্তি রপ্তানিতে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা বায়রার

মধ্যপ্রাচ্যগামী উড়োজাহাজগুলো হঠাৎ করে তাদের ভাড়া দ্বিগুণ করেছে। বিদেশগামীদের মেডিকেল ফি বেড়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। এতে অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে জনশক্তি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জনশক্তি রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছে সংস্থাটি।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ইস্কাটনে সংগঠনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ–সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন সংগঠটির নেতারা। উড়োজাহাজ ভাড়া ও মেডিকেল ফি দ্রুত কমানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বায়রার সভাপতি সাংসদ বেনজীর আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফি বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ বহির্গমন ছাড়পত্র, পুলিশ ছাড়পত্রসহ বিভিন্ন খাতে খরচ ও উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যায়। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে গমনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারগুলোর সমন্বয়কারী সংস্থা গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল অ্যাপ্রুভড মেডিকেল সেন্টারস অ্যাসোসিয়েশন (গামকা) তাদের মেডিকেল ফি আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। ৫ হাজার টাকা থেকে তাদের ফি এখন সাড়ে ৮ হাজার টাকা।

বায়রা বলছে, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইতিহাদ এয়ারলাইনস, ফ্লাই দুবাই, এয়ার এরাবিয়া এবং জেট এয়ারওয়েজসহ ১০টি বিদেশি বিমান সংস্থা তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়। এর প্রভাবে ওই রুটে বাংলাদেশ বিমানসহ অন্য বিমান সংস্থা ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। এই ভাড়া বৃদ্ধির পরিমাণ ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ।
বায়রা নেতারা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে জেদ্দা একমুখী (ওয়ানওয়ে) টিকিটে ভাড়া ছিল প্রায় ২৮ হাজার টাকা। সেই ভাড়া এখন নেওয়া হচ্ছে ৪৭ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। মধ্যপ্রাচ্যের অন্য রুটগুলোতেও একই অবস্থা। এতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
বায়রা সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, টিকিট বিক্রির সঙ্গে সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকার কারণেও উড়োজাহাজের ভাড়া বেড়ে যায়। উড়োজাহাজের ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে রাখতে দ্রুত মুক্ত আকাশ নীতি (ওপেন স্কাই পলিসি) ঘোষণা করার দাবি জানান তিনি। এর মাধ্যমে যেকোনো বিমান সংস্থা বাংলাদেশে আসতে পারবে এবং তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, অভিবাসন ব্যয় বৃদ্ধির জন্য শুধু রিক্রুটিং এজেন্সির দায়িত্ব নয়। অভিবাস প্রক্রিয়ায় একজন অভিবাসপ্রত্যাশী কয়েক হাত বদল হন। এ কারণেই ব্যয় বাড়ে। ব্যয় কমাতে কর্মী প্রেরণের পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে করার পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বায়রা বলেছে, যেসব কারণে অভিভাবসন ব্যয় বেড়ে যায় সেগুলো ঠিক করা না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। এর দায়ভার বর্তায় রিক্রুটিং এজেন্সির ওপর। ব্যক্তি পর্যায়ে অর্থাৎ আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে আনা ভিসার দায়ভারও বায়রার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। এসবের দায়ভার তারা কেন নেবে?
বায়রা নেতারা মনে করছেন, তাঁরা যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছেন দ্রুত সেগুলোর যৌক্তিক সমাধান হওয়া উচিত। এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জনশক্তি পাঠানোর ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা খেতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় এই ক্ষেত্রটিতে বড় ক্ষতি হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ, সহসভাপতি মনসুর আহমেদ কালাম, যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান ও মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী ও লিমা বেগমসহ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরবিএমের সঙ্গে মতবিনিময়
সংবাদ সম্মেলন শেষে বায়রা নেতারা বৈঠকে বসেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতের সংবাদ কাভার করা সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টসের (আরবিএম) সঙ্গে। এ সময় বায়রা নেতারা বলেন, জনশক্তি খাতের কাজে গতি আনতে সাংবাদিকদের সহায়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমের ইতিবাচক প্রচার এ খাতের উন্নয়নে বেশ কাজে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তাঁরা।
আরবিএমের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হায়দার আলী ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ উল হকের নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্যরা মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন।