Thank you for trying Sticky AMP!!

জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত

২০১৫ সালের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনের উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের স্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৪ সালে মোট ১৮৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ১৪২। ২০১৩ সালেও বাংলাদেশের স্থান ছিল ১৪২। প্রতিবেশী ভারত আগের বছরের তুলনায় পাঁচ ধাপ এগিয়ে এসে তালিকায় স্থান পেয়েছে ১৩০ নম্বরে। অন্যদিকে পাকিস্তান আরও এক ধাপ নেমে এসে স্থান নিয়েছে ১৪৭-এ।
গতকাল সোমবার ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় জাতিসংঘ উন্নয়ন তহবিলের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। এ বছরের প্রতিবেদনের বিষয় ‘কর্ম’। শুধু চাকরি অর্থে নয়, তার বাইরে বৃহত্তর অর্থে কর্ম কীভাবে মানব উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে, প্রতিবেদনটিতে সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। কারিগরি ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ফলে কর্মক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন এসেছে, তার সঙ্গে এসেছে নতুন সমস্যা ও সংকট। প্রতিবেদনটিতে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি দেশের সব কর্মক্ষম মানুষের জন্য সমমর্যাদাসম্পন্ন জুতসই কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, গত ২৫ বছরে প্রায় ২০০ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করার মাধ্যমে দারিদ্র্যমুক্তির পথে বিশ্ব অনেকটা এগিয়েছে। কিন্তু এখনো মাত্র দৈনিক দুই ডলারের কম আয়ে জীবনযাপন করে, এমন কর্মরত মানুষের সংখ্যা ২০ কোটি।
এই প্রতিবেদনের কেন্দ্রে রয়েছে মানব উন্নয়ন সূচক। আয়ু, শিক্ষা ও মাথাপিছু আয়—মানব উন্নয়নের এই তিনটি সূচক বা ইন্ডিকেটরের ভিত্তিতে মানব উন্নয়ন সূচক নির্ধারিত হয়ে থাকে। ২০১৪ সালের উপাত্তের ভিত্তিতে প্রস্তুত ২০১৫ সালের মানব উন্নয়ন সূচকে প্রথম তিনটি দেশ হলো নরওয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও সুইজারল্যান্ড। আর সবচেয়ে নিচের তিনটি দেশ হলো নাইজার (১৮৮), সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (১৮৭) ও ইরিত্রিয়া (১৮৬)।
মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় যে ৩৯টি দেশ রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে। তবে এই তালিকার সর্বশেষ তিনটি দেশের একটি হলো বাংলাদেশ। মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে তার নিচে রয়েছে শুধু কম্বোডিয়া ও সাও তোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে।
এই প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের মানব উন্নয়ন সূচকের যৌগিক পরিমাণ হলো শূন্য দশমিক ৫৭০। অর্থনৈতিক অসমতার কারণে এই সূচকে বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমাণ ২৯ দশমিক ৯ শতাংশ। অন্যদিকে ভারতে ও পাকিস্তানে অসমতার জন্য ক্ষতির পরিমাণ যথাক্রমে ২৮ দশমিক ৬ ও ২৯ দশমিক ৯। সমতার জন্য মধ্য আয়ের দেশগুলোর গড় ক্ষতির পরিমাণ ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১৫ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক ৬ বছর; গড় শিক্ষা বছর ১০; মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ১১৯ ডলার।
গত দুই দশকে মানব উন্নয়নের তিনটি সূচকেই বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তরের প্রধান ড. সেলিম জাহান প্রথম আলোকে এক লিখিত মন্তব্যে জানিয়েছেন, ১৯৯০-২০১৪ সাল, এই ২৪ বছরে বাংলাদেশের মানব উন্নয়ন সূচক বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ভারতের তুলনায় এই দেশে মাথাপিছু আয় অনেক কম হলেও মানব উন্নয়ন সূচকের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্থান তার ওপরে। যেমন বাংলাদেশে জন্মের সময় হিসাবে গড় আয়ু প্রায় ৭২ বছর, সেখানে ভারতে ৬৮। পাকিস্তানে আরও কম, ৬৬ বছর। বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৪১। ভারত ও পাকিস্তানে এই হার যথাক্রমে ৫৩ ও ৮৩।