Thank you for trying Sticky AMP!!

জিপি-রবির কাছে পাওনা আদায়ে আবার আলোচনা

জিপি ও রবি

দুই শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি আজিয়াটার কাছ থেকে পাওনা আদায়ের প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা হতে পারে। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে নতুন করে আলোচনার নির্দেশনা মিলেছে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। যদিও দায়িত্বশীল কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি স্বীকার করেননি। 

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরের পর গণভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক ও দুই অপারেটরের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পাওনা আদায়ের বিষয়টি সুরাহার জন্য বিটিআরসি ও দুই অপারেটরের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা এবং কমিটির মাধ্যমে নিরীক্ষা প্রতিবেদন যাচাই করার বিষয়ে আলোচনা হয়। দুই পক্ষ সম্মত হলে দুই অপারেটর শর্ত সাপেক্ষে বিটিআরসিকে কিছু টাকা দেবে। শর্তটি হলো, নিরীক্ষা পর্যালোচনায় শেষ পর্যন্ত কোনো পাওনা না টিকলে অথবা পরিশোধিত অর্থের চেয়ে দাবি কম দাঁড়ালে বিটিআরসি বাকি অর্থ ফেরত দেবে। অবশ্য কোনো কিছুর বিষয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে দাবি করে সূত্র। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি বা অপারেটরদের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

নিরীক্ষা করিয়ে রাজস্বের ভাগাভাগি, কর ও অন্যান্য খাতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি টাকা দাবি করছে বিটিআরসি। অবশ্য গ্রামীণফোন ও রবি বরাবরই বলে আসছে, তারা নিরীক্ষার সঙ্গে একমত নয়। 

পাওনা আদায়ে বিটিআরসি গ্রামীণফোন ও রবিতে প্রশাসক বসানোর উদ্যোগ নেয়। এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিটিআরসি দুই অপারেটরকে লাইসেন্স (টু–জি ও থ্রি–জি) বাতিল কেন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেয়। গত বৃহস্পতিবার টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিটিআরসিকে প্রশাসক বসানোর অনুমোদনও দিয়েছে। 

এর আগে বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যদিও সেই উদ্যোগের সুফল মেলেনি। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে গেছে গ্রামীণফোন ও রবি। গ্রামীণফোনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট পাওনা আদায়ে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। যদিও বিটিআরসি এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করেছে। বিটিআরসির করা আবেদনটি ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এ দিন ধার্য করে দেন।

পরে বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, আদালত আগামী ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। 

এদিকে সালিসকারী নিয়োগ চেয়ে গ্রামীণফোনের করা আবেদন হাইকোর্টে খারিজ হয়েছে। গতকাল সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। 

হাইকোর্ট গ্রামীণফোনের আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানান খন্দকার রেজা-ই রাকিব। গ্রামীণফোনের আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৯৬ সালে গ্রামীণফোন যখন বিনিয়োগ করে, তখন বিটিআরসির সঙ্গে করা চুক্তিতে সালিসের শর্ত ছিল। তবে বিটিআরসি ২০০৪ সালে একতরফা ওই শর্ত বাতিল করে দেয়। গ্রামীণফোনের অবস্থান ছিল বিটিআরসি একতরফাভাবে ওই শর্ত বাতিল করতে পারে না। নিরীক্ষা দাবি নিয়ে বিরোধ সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হতে পারে বলে গত ২৯ জুলাই সালিসকারী নিয়োগ চেয়ে আবেদনটি করে গ্রামীণফোন, যা খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।