Thank you for trying Sticky AMP!!

টাকার অভাবে অনিশ্চয়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি

সাজিদা আক্তার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় তাঁর মেধাক্রম ১৩৮১। ভর্তির হওয়ার শেষ তারিখ ১ ডিসেম্বর। কিন্তু টাকার অভাবে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের সাজিদা আক্তারের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন।
দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া এই মেয়েটি এবার ভর্তি পরীক্ষার মেধাক্রম অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন। ভর্তির জন্য তাঁর প্রয়োজন ১১ হাজার টাকা। কিন্তু সাজিদার পরিবারের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় সাজিদাদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, সহায়সম্বল বলতে ভিটেটুকুই আছে। একটি টিনের ছাপরাঘর সেটি। ঘরের বেড়া দেওয়া রয়েছে পাটকাঠি দিয়ে। দুটি চৌকি ঘরের ভেতরে। তার একটিতে বইপত্র সাজানো। ওই ঘরের এক কোণে বসে এত দিন পড়াশোনা করেছেন সাজিদা।
সাজিদার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সাজিদা পঞ্চম। বাবা আবু তাহের পেশায় দিনমজুর। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি এখন আর কাজে যেতে পারেন না। মা রাজিয়া খাতুন গৃহিণী। বড় ভাই পাঁচ বছর আগে বিয়ে করে আলাদা সংসার করেছেন। মেজো ভাই মো. আজিজুলের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার আয়ে এখন টেনেটুনে চলছে ওদের সংসার। আর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন জনতা মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। টাকা না থাকায় বিদ্যালয়ে পড়ার সময় বাড়ি থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে সদরে হেঁটে যাওয়া-আসা করতে হতো সাজিদাকে। টিফিনে খেত এক গ্লাস পানি। এভাবে পড়াশোনা করেই ২০১৩ সালে এসএসসিতে সদর উপজেলার জনতা উচ্চবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পায় সে। এরপর ভর্তি হয় ধরমপাশা ডিগ্রি কলেজে। সেখান থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পান সাজিদা।
সাজিদার বাবা আবু তাহের বলেন, ‘আমরা নিজেরাই তো ভালা কইর্যাচ খাইতামই হারি না। হেরে আর ঢাকা ভার্সিটিত ভর্তি করাইয়াম ক্যামনে? হুনছি অহন ভর্তি অইতেই ১১ হাজার টেহা লাগে। অত টেহা আমরা কই ফাইয়াম।’
সাজিদার স্বপ্ন একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার। সাজিদা বলেন, ‘দুই চোখে অন্ধকার দেখছি। দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সামর্থ্য তাঁদের নেই। কীভাবে যে কী হবে!’
ধরমপাশা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল করিম বলেন, সাজিদা অত্যন্ত মেধাবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে সে ভালো করবে।

আরও পড়ুন: 

সাজিদার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হচ্ছে