Thank you for trying Sticky AMP!!

টিপু সুলতানের সঙ্গে নেই আ.লীগ

বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের বিভিন্ন জায়গা পোস্টারে ছেয়ে আছে। কিন্তু ছয় প্রার্থীর মধ্যে তিনজনের পোস্টারেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি শোভা পাচ্ছে।

মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে আবু জাফর নামের এক চাকরিজীবী বলেন, ‘এখানে সবাই মহাজোটের প্রার্থী। তাই এত প্রার্থী পোস্টারে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়েছে। এমন হওয়ায় ভোটাররাও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। কে মহাজোট প্রার্থী আর কে না তা নিয়ে ধন্দের মধ্যে আছি আমরা।’

বরিশালের এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ছয়জন প্রার্থী। বর্তমান সাংসদ ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান (নৌকা), সাবেক সাংসদ ও জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু (লাঙ্গল), যুবমৈত্রীর বহিষ্কৃত নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান (ট্রাক) ও বিকল্পধারার এনায়েত কবির (কুলা), বিএনপির জয়নুল আবেদীন (ধানের শীষ) ও ইসলামী আন্দোলনের সিরাজুল ইসলাম (হাতপাখা) মাঠে আছেন।

টিপু সুলতান ছাড়াও জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া ও বিকল্পধারার নূরুল ইসলাম দুজনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে পোস্টার ছেপেছেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমানের পক্ষে নেমেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা সদরের কলেজ মোড় এলাকার এক চা দোকানদার বলেন, ‘এইটা অইলো মহাজোটের এজমালি (অংশীদারি) আসন। চারজন প্রার্থী দাবি করে হ্যারা সবাই মহাজোটের প্রার্থী। নৌকা যারে দিছে হ্যার লগে আওয়ামী লীগের কেউ নাই বললেই চলে। আওয়ামী লীগের এক পক্ষ গ্যাছে ট্রাকে, আরেক পক্ষ লাঙ্গলে। আওয়ামী লীগের এমন আচরণে এহন নৌকার কাহিল দশা!’

মীরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা নেমেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমানের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে। নৌকার প্রার্থীর বাইরে আরও দুজন নিজেকে মহাজোট প্রার্থী দাবি করছেন। কিন্তু বিএনপিতে কোনো বিভক্তি নেই, ভোটও ভাগাভাগি নেই।

আরেকজন ভোটার বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় এখানে আওয়ামী লীগই চায় না নৌকা জিতুক। না হলে তাঁরা নৌকার পক্ষে থাকবে না কেন, এটা আশ্চর্য।

কেন আওয়ামী লীগ নৌকার পাশে নেই এমন প্রশ্ন করা হলে বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী ইমদাদুল হক বলেন, ‘মূলত এখানে মহাজোটের প্রার্থী কে সেটা কেন্দ্র থেকে আমাদের সুস্পষ্টভাবে জানানো হয়নি। তাই নেতা-কর্মীরা তিন প্রার্থীর হয়ে কাজ করছেন।’

বর্তমান সাংসদ তো নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন—এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘তিনি নৌকা পেলেও আমাদের কাছে আসেননি। তাই আমরা যাঁরা নেতৃস্থানীয় আছি তাঁরা কারও পক্ষে মাঠে নামিনি। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর মাঠে নামব।’

বর্তমান সাংসদ ও নৌকার প্রার্থী টিপু সুলতান বলেন, তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছেন এবং এখনো যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতাদের নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। তারপরও তাঁরা কেন নামছেন না তা তিনি বুঝতে পারছেন না।

পোস্টারে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়া প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, জাতীয় পার্টি মহাজোটের অংশ। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করেছেন। তা ছাড়া এখানে মহাজোটের শরিক দলের তিনজন প্রার্থী আছেন।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা এত দিন তাঁর সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু গতকাল রাত থেকে শুনছেন, তাঁরা নাকি ট্রাক প্রতীকে সমর্থন দেবেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পারছেন না, মহাজোটের তিনজন প্রার্থীকে রেখে তাঁরা (আওয়ামী লীগ) কীভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দেন।

এ বিষয়ে আতিকুর রহমানকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি।